আমার গল্প অল্প
আমি ছোট বেলা থেকে লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত। কখনো কবিতা বা গল্প। চারিপাশে দেখা বিষয় নিয়ে কখনো বা প্রকৃতি নিয়ে,কল্পনা বাস্তবতার মেলবন্ধনে। আবার কখনো নিজেদের পারিবারিক ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্মৃতিচারণ মূলক চরিত্র বা ঘটনা নানাবিধ বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেছি।
আমার স্কুলের বাংলা টিচার শ্রদ্ধেয় চিত্ত রঞ্জন স্যারের কাছে কবিতা আবৃত্তি শেখা শুরু হয় আমার সেই ছোট বেলার স্কুল জীবনে। এবং তাঁর হাত ধরে বরিশালের স্থানীয়, ‘ চন্দ্রদ্বীপ’ মাসিক পত্রিকায় আমার লেখা কবিতা ছাপা হলো প্রথমে।
চন্দ্রদ্বীপ পত্রিকার একটা লেখক সমাবেশ হতো সেসময়। সেখানে কবি সাহিত্যকদের নিয়ে সমাবেশে আলোচনা সমালোচনাও হতো নতুন লেখকদের লেখা নিয়ে।
কারণ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন বিশিষ্ট গুনী কবি সাহিত্যিক জনাব শিকদার রেজাউল করিম সাহেব । আমি এবং আমার বান্ধবী অঞ্জু মিলে স্যারের সাথে যেতাম সেই বৈঠকে অংশ নিতে। আলোচনায় নিজেদের ভুলগুলো বুঝতে পারতাম।
বিশেষ করে ৯১ সালে আমার লেখা কবিতা ” মৃত্যুর কাছে প্রশ্ন” বিশেষ ভাবে জনপ্রিয়তা পায়। আমার সহপাঠীরা কেউ কেউ আমার লেখা কবিতাটি সেসময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাঠ করে আমার কাছে অনুভূতি শেয়ার করেছে তাদের। কবিতাটি ওই সময় জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর।
এর পর বরিশাল ছেড়ে চলে গেলাম মামার বাড়ি ফরিদপুর শহরে। সেখানে শিল্পকলা একাডেমিতে ভর্তি হয়ে গানের পাশাপাশি আবৃত্তি চর্চা করতাম।যেহেতু আমি ৯১ থেকে ৯৪ সালে শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার পাশাপাশি সঞ্চালনা করতাম বিভিন্ন জাতীয় প্রোগ্রামগুলো, তাই অনেক স্ক্রিপ্ট আমার নিজেকে লিখে তৈরী করতে হতো।কোথাও কথার ফাঁকে সুকৌশলে কবিতা লিখে লিখে যোগ করে আরও শ্রুতিমধুর করতে হতো। এইজন্য লেখার উপর ভালোলাগা কাজ করতো।
আমার এই সুন্দর কাজে আমাকে অনুপ্রেরণা ও দায়িত্ব দিয়েছিলেন ফরিদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির বিশিষ্ট গুনী শিল্পী ও প্রশিক্ষক শ্রদ্ধেয় পান্না স্যার।আমার মায়ের সঙ্গে একই সাথে গান করেছেন তৎকালে তিনিও।আরও উৎসাহ দিয়েছেন নজরুল সংগীত শিল্পী শ্রদ্ধেয় সেলিম মামা।এবং গুণী রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী শ্রদ্ধেয় কেয়া আপা।
পাশাপাশি কলেজের ম্যাগাজিনেও ছাপা হতো আমার লেখা।লেখার প্রচুর অভ্যাসে এবং সেই স্কুল জীবন থেকে অনেক ধরণের পান্ডুলিপি জমেছে। কবিতা, গল্প,তথ্যমূলক লেখা,ভ্রমণ, কাহিনী ইত্যাদি বিষয় সহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে। সেই সব জমে থাকা পান্ডুলিপি কারেকশন করে আমি ইতিমধ্যে অনেকগুলো বই আকারে প্রকাশ করতেই পারতাম, কিন্তু সেটা আমি করতে সাহস পাইনি।
আমি আজও নিজেকে কবি বা লেখক বলে আখ্যায়িত করি না। আমি প্রতিনিয়ত শিখছি সব ধরনের মানুষের কাছ থেকে। আমি প্রচুর ভুল করি বেখেয়ালে।
আমি বই প্রকাশ করতে সাহস পেলাম তখন, যখন আমার লেখা পড়ে মুগ্ধ কিছু পাঠক আমাকে নক দিয়ে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। প্রকাশনা থেকে যখন অনুপ্রেরণা পেলাম। আমার যৌথ গ্রন্থ থাকলেও আমি একক কাব্য গ্রন্থ নিয়ে আসার সাহস পেলাম ভক্ত পাঠকদের জন্য, যখন তারা আমার কবিতা ‘বই ‘ আকারে হাতে পেতে চাইল। আমি বইটি তাদের জন্য প্রকাশ করেছি।
আমার একক কাব্য গ্রন্থ ‘নন্দিত ভালোবাসা’ এইবার একুশে গ্রন্থ মেলায় আসছে। এই বইটির সুন্দর নামটি আমার নিজের দেওয়া। আমি আমার মনের মতো একটা নাম নিজেই সিলেক্ট করতে পেরেছি বলে আমার ভীষণ আত্মতুষ্টি হচ্ছে।
আমার বইটির নাম ” নন্দিত ভালোবাসা” জলছবি প্রকাশক শ্রদ্ধেয় শিল্পী, লেখক কবি সাহিত্যেক গীতিকার জনাব নাসির উদ্দীন কাবুল ভাইয়ের ভীষণ পছন্দ হয়েছে। শুধুই নামের জন্য একটি নাম সিলেকশন নয়। আমি এই একটা বইতে যে কবিতা রেখেছি সেটার সাথে সংগতিপূর্ণ রেখেই নামটি মনের মতো করে রেখেছি।
আমি আমার বইটি উৎসর্গ করেছি আমার শ্রদ্ধেয় বাবা,মা’ এবং আমার শ্রদ্ধেয় শাশুড়ীমাকে।
এদের সকলের জন্য আমার ভালোবাসা সবসময় “নন্দিত” আমার স্বামী আমার সন্তান, আমার প্রিয়জন, আমার বই, আমার “নন্দিত ভালোবাসা”
আমাকে যারা ভালোবাসে মন থেকে, আমিও যাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি, আমার বন্ধু মহল, আমার শুভাকাঙ্ক্ষী, আমার ভক্ত,পাঠক সকলে এই নন্দিত ভালোবাসার বিরাট একটি অংশ জুড়ে আছে।
বইটি পাওয়া যাবে বই মেলায় জলছবি প্রকাশন স্টল থেকে এবং রকমারি ডটকমে।