যন্ত্রণার অনল
সেলিনা আখতার
জীবন একটি জাদু খেলার মঞ্চ। মানুষের বুকের মধ্য থেকে যে সাধারণ শ্বাস-প্রশ্বাস বেরিয়ে আসতে দেখি আমরা অনেকেই জানিনা সেই শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে কতটা জীর্ণ ব্যথা কতটা ভাঙাচোরা আর চাপা কষ্টের উত্তাল ঢেউয়ের শব্দ বুক ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাই।
মানুষ রক্তমাংসের সৃষ্টি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভেতরটা অতি যত্নের সাথে অতি সাবধানতার সাথে তৈরি করেছেন । যে কারণে মানুষ সমস্ত কষ্ট সহ্য করে হাসিমুখে পৃথিবীতে বিচরণ করতে পারে। পরিচিত-অপরিচিতকে উচ্চস্বরে বলতে পারে -আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। বিশেষ জাদুবলে পরিচালিত আমাদের এই মানসিকতা পরম আল্লাহতালার দান। এই পৃথিবীতে যে যতটা নিজেকে পরিপাটি ও হাস্যচ্ছল রাখতে পারে সেই প্রকৃত জাদুকর। ভেতরের বাঁধভাঙ্গা যন্ত্রণাকে যে যতটা মজবুত বাদ দিয়ে সমাজ-সংসারে নিজেকে সুখী প্রমাণ করতে পারে সেই সব থেকে বড় জাদুকর।
এই জাদু আমাদের নারী-পুরুষ সবার মাঝেই বিরাজমান। কোথাও চরম দক্ষতার সাথে নারী এই ভূমিকা পালন করছে, কোথাও পুরুষ। এখানে যে যাকে একবার হারিয়ে দক্ষতাঃ দেখিয়েছে সে সফল শাসক। তাকে বিধাতা ছাড়া আর কেউ নেই দমানোর।
আর যে শাসিত সেও একদিন একটু একটু করে শামুকের মতো নিজের বাহিরটাকে শক্ত প্রলেপে আবৃত করতে শিখে যায় ।
এবং একদিন সে সত্যি সত্যি নিজের যন্ত্রণাগুলো কে জয় করতে পারে । আসলে মানুষের মত অসহায় প্রাণী আর নেই। মানুষকে সব সময় একটা সীমাবদ্ধতার মাঝে আটকে থাকতে হয়।
বৈচিত্র্যময় জীবনের সমস্ত উচ্ছ্বাস সবার জন্য নয় ।আমরা আমাদের জীবনের মূল্যবান সময়, স্বপ্ন, বিশ্বাসও ভালোবাসাগুলো যাদের কাছে নির্ভরযোগ্যতার সাথে জমা রাখি দিন শেষে সেই নির্ভরযোগ্য জায়গাটিই চরম বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় ।
গচ্ছিত সবটুকু আমানতগুলোকে দুর্বলতার মাপকাঠিতে এনে নিঃশ্ব করে দিতে সক্ষম হয়। এ খিয়ানতের কোন সাক্ষী থাকে না, কোন মানবিক সান্ত্বনা ও থাকে না । থাকে শুধু অপমান আর অগ্রহণযোগ্যতা।
আল্লাহ পাক সবাইকে টিকে থাকার তৌফিক দান করুন আমীন।