চল্লিশের পরের জীবন
মাহমুদা খাতুন
আমাদের ৪০ বছর বয়সের পর, প্রত্যেকের জীবনে একটা প্রিয় বা গোপন ভালোবাসার মানুষ থাকা উচিৎ।কারো কারো জীবনে, যেখানে গেলে মন তৃপ্তি পায়,যার কথা রাত বাড়লেই মনে পড়বে।এই সম্পর্কটা কে অনেকে ভাবতে পারে, ছি! এই বয়সে শারীরিক সম্পর্ক! আসলে ৪০ শের পরে কোনও মেয়েরই তীব্র সেক্স থাকে না। তাই মনের ভুলেও মনে করবেন না, এটা শারীরিক সম্পর্ক! এটা মানসিক সুস্থতা থাকার গোপন ঔষধ। এই সম্পর্কের কথা দুটা মানুষ ছাড়া ভুলেও কাউকে বলা উচিৎ না।এটার মধ্যে আলাদা টান থাকে।আলাদা রহস্য থাকে। এমনও হতে পারে এটা দুই জন পুরুষ মানুষ! এমনও হতে পারে এটা দুইটা মেয়ে বন্ধু!এটা ভীষণ রকম অসম্পূর্ণ ভালোবাসা,ভাবছো এই বয়সে ভালোবাসা? কি সর্বনাশ!! আসলে কিন্তু এই ভালোবাসা কিশোর বা কিশোরী বয়সের ভালোবাসা না! এটা হলো দীর্ঘ দিন ধরে সংসার,সন্তান, অফিস করতে করতে এক ঘেয়েমি থেকে বের হওয়ার মানসিক শান্তি।
এতোদিন যে যে জায়গাগুলো অন্ধকারে ডুবে ছিলো,যে কষ্ট গুলো খুব কাছের মানুষ ও বোঝার চেষ্টা করেনি,অথচ নতুন মানুষ টা ফোনের ওই প্রান্ত থেকেই বুঝতে পারবে,গলার আওয়াজ শুনে দুই জন, দুই জনের ব্যাথার জায়গাটা অনুভব করতে পারবে,এটাই হলো মানসিক শান্তি।
এমন একটা মানুষ শুধু স্বপ্নেই আসবে না বাস্তবে ও আসা উচিৎ। বাস্তবে দুজন পাশাপাশি বসে অভিমানী গলায় দুই জন, দুজনের দীর্ঘ দিনের কষ্ট কোথায় তা শেয়ার করবে।দুজন বলবে প্রতিদিন তোমার/তোর কাছে ফোন দিতে বা কাছে যেতে ভালো লাগে না।তবুও দুজন,দুজনকে ফোন না দিলে,কাছে না গেলে ভালো লাগে না।আবার বেশি কাছে গেলে নিজের জগতে ফিরতে ও ভালো লাগে না।
সব ভালোবাসাতে মাথা উঁচু করে হাত ধরে হাঁটা যায় না সকলের সামনে।কিছু ভালোবাসা পর্দার আড়ালে একে অপরের বুকে মাথা গুঁজে ভিজে নিতে হয় বেহায়া চোখের নোনা পানিতে।
জীবনে এমন একজন প্রিয় মানুষের ভুমিকা এতটুকুই,তাতে সব মিলেই সুস্থ থাকতে পারে মন।আর এই বয়সে মনের সুস্থ থাকাটা সব থেকে বড় বেশি দরকার!কারণ দিনশেষে এই বয়সে সবাই কেমন যেন একা!! কদমই একা!