খোলা মরণ দ্বার
মো. আসাদুল হক
একদিকে প্রাসাদ পাহাড়!
প্রকোষ্ঠে বীণার ঝঙ্কার!
আর একদিকে হাহাকার!
উপবাসীর সামনে খোলা মরণ দ্বার!
একদিকে উন্নয়ন
অপরদিকে ভিজা নয়ন!
পেটে লয়ে ক্ষুধার জ্বালা!
ক্ষুধাতুর মা’য়ের পথ চলা!
যদি জুটে ডাল ভাত-
রাত পাড় করে দেখবে, আর একটা প্রভাত।
শুরু হবে- ভাত দে- ভাত দে-
কম নেই- এমন বলার মানুষ!
কতোরা আছে পড়ে দুখের খাদে
অবাক চোখে দেখে উন্নয়নের ফানুস।
যার আছে ভূরি ভূরি; সে করছে দিবস রাতি চুরি!
সাহেবের কষ্ট হয় দিতে; শ্রমিকের মজুরি!
করে কালোবাজারি, বড়দের সাথে মিতালী গড়ি
শহরে করে স্বর্ণকমল বাড়ী
বাকি অর্থ করে ভিন দেশে পাচার!
আহারে- চক্ষু বন্ধ করে থাকে খুদে সরকার!
পেটের তাগিদে অজস্র শিশু কলে কারখানায়!
আর ইটখোলায় ইট ভাঙ্গে শিশুর মা’য়!
স্বপ্নে দেখে শিশুরা, বিদ্যালয়ে যায়
অমানুষিক শ্রমে ঘাম ঝরায় দিনের বেলায়!
ওদেরকে টানে রাজনীতির মিছিলে
নেতা নেত্রীর পোলাপান পড়ে বিদেশের স্কুলে
হায়- কী জনদরদী নেতা!
ভোটের আগে মিশে যায় বুকে বুকে
ভোট শেষে সাজে শয়তানের প্রেতাত্মা
বলে দেয়, পাবলিক যেনো তার কক্ষে না ঢুকে।
সম্পদের পাহাড় গড়ে, শকটে চড়ে ধুলা উড়ে
সরকারী গাড়ী দিয়ে রোজ রোজ বাজার করে
শকটে বসে থাকে বেগম সাহেবান নিজে
অফিসের পিয়নকে খাটায় সাহেবের বাসার কাজে
এই তো স্বাধীনতার সুফল!
ওরা মুখ ধুইতে খুঁজে, কোথায় কচি ডাবের জল ?
দেশটাই তাদের জমিদারি
আর মানুষেরে মনে করে ভিখারি!
বিফল একাত্তরের রক্তের গড়াগড়ি!
বৃথা তাজা প্রাণ বিলানো; স্বাধীনতা আনতে কাড়ি!
পরিণতি এই! থাল পেতে হাঁকে, ভাত দে- ভাত দে-
পেটে লয়ে প্রচণ্ড ক্ষুধে!
ঘুরে দ্বারে দ্বারে তাপিত রোদে!
সরল সুবোধরা আছে আজি এমনি ভয়ঙ্কর ফাঁদে!
দেখার কেউ নেই; এরা দিনে কতোবার কাঁদে!