বিভৎস নগরী
মোঃ ওসমান গনি
নগরীর কোথাও ফুল নেই-জল নেই তৃষ্ণার
সাধু-তপ ধর্মে পুড়ছে জোছনা নগরী
লাউয়ের মাচা নেই-সজিনা গাছে সজিনা নেই
প্রজাপতি নেই
পীতবর্ণের ঘাসও নই
কৃষ্ণচূড়ার মিহি সবুজ পাতা নেই
বিবর্ণ ডালগুলি কেবলই এক একটা রুক্ষ কঙ্কাল
খাঁ-খাঁ মরুভূমি
একটার পর একটা মড়া পঁচার বিদ্ঘুটে দুর্গন্ধে
কাক-শকুনের সারশূন্য হাড় টানাটানি
কামড়া কামড়ির মহারণ
আকাশের কোথাও মেঘ নেই বৃষ্টির
সমুদ্রে ঢেউ নেই বাতাসের
স্থির ঠাঁয় মৃত মাছের চোখের মতো সমুদ্রও
তাকিয়ে রয় জলহীন মরুর বুকে
শ্মশানের হৃদপিণ্ড একে একে খুড়ে খায় নৈরাজ্যের পঙ্ক পাল
কোথাও ঠাঁই নেই দাঁড়াবার-
কুকুরের জিহ্বার জল শুকিয়ে যায় মাছিদের উল্লাসে
মহিশের ছুটাছুটি- চাতকের নৈশব্দ ক্রন্দন
কাকেদের বিদীর্ণ চিৎকারে আকাশে ঝড় ওঠে
তবুও নগরীর কোথাও মানুষ নেই শীতলতার
জল খাওনোর-ফুল ফোটাবার!
অথচ পাড়ার গলি পথে আনন্দ মিছিল
গুড়-মুড়ি, কলার ছড়াছড়ি-ধূপবাতি
একদল হনুমান নির্ভীক চিত্তে কোচড় পাতে
হাত বাড়ায়
আলোহীন নগরীর মোড়ে মোড়ে নৃত্য- আস্ফালন
কলার কাড়াকাড়ি
বিভৎস হাস্যরসের উলুধ্বনি-
অথচ বিভৎস নগরীর কোথাও মানুষ নেই
কোথাও অমানুষ নেই সশব্দ মেরুদণ্ডের
ফুল ফোটানোর
সবাই একই ধূপবাতি হাতে নির্লিপ্ত সাধু-সন্যাস
গুড়-মুড়ি চিবানোর।