এইসব মহাজন
আমিনুল ইসলাম
ঈগলের সশস্ত্র ডাইভ যখন ছোঁ মেরে নিয়ে যায় উঠোনের ব্যাং,
মুরগির ছানা, শিশুর খাবার কিংবা কিশোরীর কপালের টিপ,
তখন তারা সেই ডানার বাতাস-ভাঙা গতির প্রশংসায়
প্রগলভ হয়ে ওঠে; আর যখন গেরস্তের ডেঁপু ছেলেটি তাক করে
তার তীর ও ধনুক অথবা কৈশোরের বরই পাড়া গুলতি,
তখন তারা ছেলেটির সন্ত্রাস নিয়ে লাল হইচই রচে
গেরস্তের উঠোনে, আকাশের বারান্দায়, বাতাসের ব্যালকনিতে;
মেঘলা আকাশের মেঘ ভেঙে যখন চাঁদ ওঠে সিক্ত পূর্ণিমার,
জ্বলে ওঠে জোনাকি- গেয়ে ওঠে ব্যাঙ্গমা-
‘চাঁদের আলো বাধ ভেঙেছে উছলে পড়ে আলো’.
তখন তারা জোছনার বিরুদ্ধে যায়- রটনা করে কুৎসা:
‘এই চাঁদের কারণে ঘুমের বিঘ্ন ঘটছে গাছপালা ও নদনদীর,
এই চাঁদের কারণে শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে নদীপিয়াসী
পাখপাখালির; প্লিজ আমাদের কথা বিশ্বাস করুন-
এই চাঁদ তলেতলে একটি শান্তিবিরোধী অন্ধকারবাদী উপগ্রহ!’
তারপরও যখন ফাঁস হয়ে যায় কালো বুদ্ধিবদ্ধ চুরির ঘটনা,
ঈশান কোণে দানা বেঁধে ওঠে নিন্দার মেঘধুলিঝড়,
তারা চোরদের আড়াল করতে গল্প রচে সব দোষ চাপিয়ে
অন্যের ঘাড়ে; এবং তা দেখে মুখ টিপে হাসে
উঠোন ঘেঁষা উঠোনে সন্ত্রাস রচনার কারিগর ঘরস্থ টিকটিকিরা;
এইসব দুমুখোদের কারো কারো বাহুতে নক্ষত্রখচিত ব্যাজ
যাদের সেই ব্যাজ নেই, তারা দেনদরবার করে যায়
স্বপ্নবাজ আঁধারের নক্ষত্রখচিত দরবারে। এবং এই মহাজন-
সিন্ডিকেটের কারো কারো আন্তর্জাতিক সংস্করণ আছে…
—০—

