তিন। জলি ভাবী ও জাহিদের চোখ ভিজে এলো। ভরা বর্ষায় বুড়িগঙ্গাও পোয়াতি নববধু। প্রায় চারশ বছর আগে বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা ঢাকা শহরের এক কন্যার বধু বেশ দেখে বুড়িগঙ্গাও যেন অশ্রুসিক্ত হলো। হঠাৎ আসা একটি ঢেউ জলিল মাঝির নৌকায় আছাড় খেয়ে জল লাফিয়ে ওঠল এবং একটু শীতল জল ঢুকে গেল ছৈয়ার ভেতর। ভিজে গেল নববধুর লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়ির আঁচল, জলি ভাবীর বাঁ-হাতের মধ্যমা আঙুল। জলের কঞ্জুস একটি ফোঁটা এসে শ্রাবন্তির চোখের ভেতর লুকালো। ঠান্ডা জলের ছিটেফোটায় একাকার হয়ে গেল শ্রাবন্তির কষ্টের গরম লোনাজল। সে সময় ছৈয়ার ভেতর ঢুকল অপু চৌধুরী। শ্রাবন্তির বর। জলি ভাবীর ভাষায় কোনহানকার কোন বাঙাল পোলা।…
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
ঘুণেপোকা [শাহানা চৌধুরী] ঘুণেপোকা ছেয়ে গেছে যত্র তত্র কি দেশ আর কি বিদেশ সবখানে নির্দয়তার সাথে বাসা বেধেছে ঘুনে ধরা সমাজ, অপসংস্কৃতি মৌলিকতার অভাবে বিবেগমান মানুষ আজ দিশেহারা, জোয়ান ছেলে মেয়েরা ডুবে থাকে সারা দিন রাত ইনটারনেট ও ফেইজবুকে। নাওয়া খাওয়া লেখা পড়া সব ছেড়ে পড়ে থাকে এই দুনিয়া ছেরে, ইনটারনেটের দুনিয়ায়, অস্থির জীবনে ভালোবাসে হিরোইন আর ইয়াবাকে কেউ সাজে ডাক্তার, কেউ সাজে উকিল কেউ বা পুলিশের আইজি সেজে হাতিয়ে নেয় সাধারণ মানুষের রুটি রুজির রোজগার। নকলে ছেয়ে গেছে সমগ্র দুনিয়া সারা দিন ভাবে শুধু সার্থ পরের মতো, নিজে কেমন করে ভালো থাকা যায় অসহায় মানুষ দিয়ে কার্য করে সমাধান,…
অচেনা গন্তব্য (সুরাইয়া সুলতানা) ০৬-০৪-২২. চেনা রাস্তায় ফিরে আসি রোজ ঘরে সারা দিনমান ঘুরি কতো অচেনা পথ, জীবনের অলিগলিতে খাই হোঁচট পায়ে ঠেকে নেই নতুন চলার শপথ। দৃশ্যমান পথগুলো সহজেই চেনা যায় অন্তরের অলিগলি পথ চেনার নেই যে উপায়, কোন পথে হাটি কোন পথ ভুল কোন পথে কাটাঁ না, আছে কিছু ফুল!
ছোঁয়া হলো না [মুন্নি শেখ] স্বপ্ন কখনো বাস্তবতা পায় না জেনেও কল্পলোকে স্বপ্নের জাল বুনি। কখনও পাখি হই আকাশ ছুঁয়ে দেখবো বলে। ছোঁয়া হলো না। কিন্তু মেঘ ছুঁয়ে দেখতে গিয়ে ভিজে গেলাম। শুধু ওই নীল আকাশ টা ছুঁয়ে দেখবো বলে। একটু একটু করে উঠতে থাকা সূর্যর আলোতে নিজেকে দেখতে গিয়ে কখন যে সূর্যাস্তের অন্ধকারে তলিয়ে গেলাম! তবুও স্বপ্ন বুনি! স্বপ্নে বিভোর থাকি।
বাজারে পাওয়া যাচ্ছে : কালের প্রতিবিম্ব স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস সংখ্যা মার্চ ২০২২ দেশ-বিদেশের শতাধিক কবি-লেখকদের লেখা নিয়ে একটি সমৃদ্ধ সংখ্যা। নিয়মিত লেখা ছাড়াও আছে বরেণ্য ও গুণীজনদের সাক্ষাৎকার। সংগ্রহ করতে পারেন প্রতিবিম্ব প্রকাশ (সৃজনশীল লেখকের ঠিকানা) পুস্তক প্রকাশক ও বিপণন যোগাযোগ: প্রতিবিম্ব প্রকাশ উত্তরা, ঢাকা। ০১৭১৫৩৬৩০৭৯ রকমারি.কম অথবা সুন্দরবন কুরিয়ার এর মধ্যেমে দেশের ভিতরে, DHL কুরিয়ার এর মাধ্যমে বিদেশে/বিশ্বের যে কোনো দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
স্বপ্নহীন প্রেম [শামীমা সুলতানা] পর্ব ১ স্বপ্ন বিমুখ নওমির জীবনে আর কোন স্বপ্ন নেই ! নিশুতি রাতের অযুত নিযুত স্বপ্ন খাঁচা ভেঙ্গে পালিয়ে গেছে। আজ নিস্বঙ্গতাকে সঙ্গী করে চলছে জীবন রথে।তিন বোনের মধ্যে নওমি মেজো বড়ো বোন নুহার যখন বিয়ে হয় নওমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ে। নুহার বর রেলওয়ে কর্মকর্তা খুলনায় পোস্টিং বিয়ের দুই মাস পরে নুহাকে খুলনায় নিয়ে যায় বাবা, মা, বোনদের সাথে হাসি ঠাট্টায় বেরে ওঠা নুহা বরের সাথে খুলনায় যেয়ে নতুন সংসার অচেনা পরিবেশে সারাক্ষণ বাসার মধ্যে একা একা খুব হাপিয়ে ওঠে।বর ব্যস্ত কর্মকর্তা সকালে অফিসে বেরিয়ে যায় আর রাত ১০ট ১১টা বেজে যায় বাসায় ফিরতে। …
আমি নগন্য নাগরিক [সুরমা খন্দকার।] অগোছালো আর ধুলো জমা হৃদয়টাতে ভাঁজ খুলে দেখি, হাজারো পুরোনো কষ্টরা জৌলুসহীন। তোমার কাপুরষ সত্তাটাকে আমি ঢেকেছিলাম, রেখেছিলাম যত্নে হিমঘরে। তুমি জিতেছিলে, জিতিয়ে রেখেছিলাম তাই তুমি অপরিপক্ক, নেই কোন মিশ্র অনুভূতি। অষ্টাদশী চোখ জোড়ায় তুমি কখনো দেখোনি কি চায়! রক্তজবার মতো দু-চোখে মেলে দেখেছি কৃষ্ণপক্ষ, শীত, বরষা। তাই বুকে অনুভূতি চমকে ওঠে। বরফ টুকরোর মতো ক্ষয়ে যায় আবেগ। রুটিন বদ্ধ জীবন চাই না, আধো জাগরণে আজ শিশিররা আশ্রয় নিয়েছে বুনোলতার বুকে। কেবল কোনো স্বপ্ন দেখতে নয়, অথর্ব অক্ষিময় স্বপ্নের মতো ছাইপাঁশ বাদ দিয়েছে। আমি অতি সাধারণ লোক, এখানে আমি নগন্য নাগরিক।
একান্তে [ সুচেতনা] দিগন্ত জুড়ে আজ উথালপাথাল মন, বলতে চাইছে উন্মুক্ত হস্ত উৎসারিত করে… বাঁধা নাই আজ পাগল হবার কারণ অন্বেষণে, তড়িৎ প্রবাহের দাপটেও আজ মানছে না মন। রুদ্ধশ্বাসে কিছু বলার অবকাশে তোমাকে… আজ সকল সুপ্ত বাসনার অবকাশে, চাইছে হৃদয় কিছু বলতে, …..একান্তে ধু ধু মাঠ যেথায় জন মানবশূন্য, তথাপি যেন সেথায় হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছার প্রকাশ হাহাকারের নিরবতা বলছে কিছু কথা, আকাশজুড়ে মেঘের মাঝে বুঝি প্রেমের আনাগোনা… লুকোচুরি খেলবে তারা মেঘ বৃষ্টির আড়ালে, মুখের ভেতরেও আরেক মুখ বলছে শুধু তোমাকে …..একান্তে চলন্ত ট্রেনের সম্মুখে দাঁড়িয়ে, দূর হতে দেখি শুধু মনের ভেতর তোমায়। বলতে গিয়েও কিছু কথা ওষ্ঠের মারপ্যাচে, জড়িয়ে ধরলো…
মানুষ মানুষের জন্য [সুপ্রিয়া বিশ্বাস] ৫/৪/২০২২ পিঁপড়ের সারির মত দলবেঁধে একসাথে অভাবেরা আসে ছুটে গরীবের দুয়ারে, চাল আছে ডাল নাই ডাল আছে চাল নাই তেল আছে নুন নাই নুন আছে তেল নাই অভাবের তাড়নায় নাভিশ্বাস সংসারে। আগুনের তাপও তো হার মেনে যায় নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হায়!! প্রতিদিন প্রতিক্ষণ কত কিছু ঘটে যায় ভাইরালও হয়ে যায় নেটের দুনিয়ায় কৃষকের ঘরে যে তিনদিন ভাত নাই ধানক্ষেতে সেচ নাই বুক ভাসে কান্নায় ভবিষ্যতের ভাবনায় আবেগের বন্যায় বিষপানে মরে যায় হতভাগা বাংলায়। আমি তুমি কেউ তো তাঁদের পাশে নাই। অনুভূতি অনুভূতি খেলাতে মত্ত মানুষ হওয়ার ইচ্ছে করিনাতো রপ্ত। দিনরাত করি মোরা হিংসার চাষবাস হোক…
অজান্তেই থেমে যাবে [হাসিনা হারভীয়া] আহত রক্তাক্ত ডানা ভাঙা পাখির মত হয়তো একদিন অজান্তেই থেমে যাবে জীবনের সব আয়োজন, শুধু স্মৃতিগুলো পড়ে রবে শূন্যে পাতার ভাঁজে ভাঁজে। মুগ্ধকর প্রকৃতির বুকে লুটে পড়ে রবে শুধুই স্মৃতি হয়ে। অজান্তেই থেমে যাবে নির্বাক নিষ্ঠুর নিয়তির খেলা, অগোছালো এলোমেলো জীবনের প্রতিটি শিরোনাম। নীরবেই নিশ্চুপ হয়ে পড়ে রবে, ওই আকাশের হাজার তারার মেলায়। এভাবেই একদিন শেষ হবে জীবনের সব আয়োজন। নিমেষে নিভে যাবে জেগে থাকা দুটো চোখ, অন্ধকারে বন্ধ হবে। মাতাল বাতাসে বিলিন হবে সেদিন আমার লাশের গন্ধ, জীবনের চাওয়া পাওয়ার দাফন হবে কাফনে মুড়িয়ে! অজান্তেই থেমে যাবে জীবনের সব আয়োজন।
