সুবাসিত চন্দন কাঠের আদর্শ।
।। শেখর সিরাজ।।
কোথায় গেলে পাইবো ভাতের নিশ্চয়তা?
কোথায় গেলে পাওয়া যাইবে পাখিদের মতো ঘুমের অভয়ারণ্য?
ভাতের নিশ্চয়তা আর ঘুমের নিরাপত্তা আমার মতো ছাপোষা গরীব মানুষের ব্যাংক ব্যালেন্স।
পাখি হইয়া জন্মাইলে চিন্তা ছিল না ভাত ও ঘুমের।
মানুষ হইয়া জন্মাইয়া পড়ছি বিপাকে,
চার আঙ্গুলের কপালে খালি পড়ে চিন্তার ভাঁজ।
দিন যায় শরীর চামড়ার বলিরেখা স্বচ্ছ জলের মতো স্পষ্ট হতে থাকে। স্পষ্ট হতে থাকে
ফাল্গুন মাসের আগুন জ্বালানো বাজার দরের উত্তাপ।
সবজি, আলু, পটলের দামের সাথে মিলাইতে পারি না পকেটের হিসাব, মিলে নাই কোনোদিন
তেল আর জলের দ্রবণ- পানকৌড়ি পাখির মতো ডুব সাঁতার দিয়ে শূন্য হাতে ফিরে গেছে কতশত বাজারের থলি।
কপালে উঠেছে চরকির চোখ।
আমার আর দোষ দিবেন কী কপালের? বড় দন্ডের লঘু অপরাধ।
চালের বদলে কাঁকর খেয়ে অভ্যাস, ক্ষুধার যন্ত্রণা নিষ্পত্তি হয় কিছু,
তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে বেঁচে থাকাকে কেউ কেউ সুখ বলে,
সুখী হওয়া পাখি প্রজাতির মানুষ।
সুখী মানুষেরা সুবোধ বালকের মতো কখনো ঘুমন্ত বাঘের লেজ দিয়ে কান চুলকায় না,
তারা ভুলে যায় মধ্যবিত্ত সুবিধাবাদী চরিত্র গোলাম হোসেনের প্রতিনিধি।।
রাজনীতি কাম বনিক দাদন ব্যবসায়ীর
পায়ের তলা চাটতে চাটতে হয়ে উঠেন
উচ্চ ফলনশীল বিত্তশালী চাটুকার।
সুদৃশ্য ড্রয়িং আর ডাইনিং টেবিলের পাশে
টাইফেট রোগীর মতো কুঁজো তাদের পিঠের শিরদাঁড়ার মেরুদণ্ড।
আমার মতো হাভাতা মানুষের ক্ষুধা যন্ত্রণায় তৈরি হয় তাদের আনন্দের প্রমোদ তরীর রাজ- প্রাসাদ।
আত্মহননের মতো তাদের মাধা ঝুকে যায় নিদিষ্ট কেবলার দিকে- টেউ খেলানো রঙ্গিন চশমার কাছে বিক্রি করে দেয় সুবাসিত চন্দন কাঠের আদর্শ।
সূর্য গ্রহণের মতো নবীন বরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা বরন করে নেয় মাতৃকালীন অন্ধত্ব।
আর অন্ধকে হাতি দর্শনের কথা বলা বিপজ্জনক ও বোকামি।