পরনির্ভরতার চাষাবাদ
সাইদুল হাসান
আবছা আলোয় ঘেরা এ ঘর বৃক্ষ পুকুরপাড়
বাঁশঝাড় ফসলের মাঠ এবং ওপাশের গ্রাম।
চারদিকে পাখিদের কুজনে স্বপ্ন ভাঙে কৃষকপুত্র
জীবন ও প্রাণের। অলসতার হলুদ চাদর গায়ে
জড়িয়ে আছে বহুবছর ধরে তবু কর্মঠ চোখ
দেয় না উঁকি একবার। ঘুম রাণীর পরশে পাল্টে
যায় জীবনচিত্র রুটিন কিংবা কার্যবিধির বিবরণ।
আত্মশক্তির বুঝাপড়া নিদ্রার কোলে মাথা রেখে
নিস্ক্রিয় করে দেয় কৃষকপুত্রদ্বয় কল্পনার শহরে।
গোলাভরা পুষ্ট ধানের পরিবর্তে চিটা ধান কিংবা
কুড়াদের নেই ভিড়। টুক টুক ধপাস শব্দে সেখানে
ইদুর বিড়ালের যুদ্ধ চলে প্রতিক্ষণ। লেপ দেওয়া
গোবর কুড়ো শুকিয়ে খসে খসে পড়ছে দিন রাত।
গোয়ালের বাঁশে ঘুণপোকা বাসা বেঁধেছে সেই
বহুদিন আগেকার কথা, ছোট ছোট গোল গোল
ছিদ্র ভেদ করে কখনো বেড়িয়ে আসে পিঁপড়ে।
শূন্য গোয়াল খা খা করে নেই হাম্বা ধ্বনি প্রতিধ্বনি।
ঘরের কোণেতে জোয়ালটা নীরব নিদ্রায় শায়িত
মইটাও মাকড়সার জালে ছেয়ে গেছে সেই কবে!
লাঙলের আলে মরচের আন্দোলন, নায়ের বৈঠা
পরিত্যক্ত জিনিস হলো কবে জানা নেই এক যুগ।
ভোর হলে মুরগের কক……..কক শব্দের স্লোগান,
কানে আসে না সেই বহুদিবস পেড়িয়ে নিস্তব্ধতা
বিরাজ করে কৃষক ঘরে। ঐতিহ্য হারিয়ে অলসতা
বুকে ধারণ করে করে যায় পরনির্ভরতার চাষাবাদ।