অহনা
রাজিনা চৌধুরী
মেঘাছন্না নীলাম্বর আকাশ।
সবুজ গাছের নেই কোন স্পন্দন।
মানব জনের নেই কোন কোলাহল।
সব কিছু থমকে আছে, ঠিক তোমার মতো।
অহনা একা বসে আছে বাসে।
জানালা দিয়ে যতদুর দৃষ্টি যায় তার আনমনে বসে বৃষ্টির নৃত্য দেখছে।
বৃষ্টির জলে টুইটুম্বর রাস্তা ঘাট।
অহনার মনটা চলে গেলো পঁচিশ বছর পেছনে
অনিকের সাথে থাকা দিনগুলোতে।
তখনি ভাবনাগুলো যেন পেয়ে বসে অহনাকে।
সে ভাবতে থাকে হে ভালবাসা,
তুমি কত-না সুন্দর!
তুমি হয়তো আর কখনো বৃদ্ধ হবে না।
প্রথম যেদিন তোমাকে অনুভব করেছি সেদিন যেমন ছিলে আজও তুমি ঠিক তেমনি আছো।
শীতার্ত বনের বুকে তুমি বারে বারে একের পর এক বসন্তকে ডেকে আনো,
তোমার সৌন্দর্য তবুও বার্ধক্যেও ক্ষয় হবে না, চিরঅক্ষত থাকবে।
তোমাকে যেদিন উপলব্ধি করেছি সেদিন থেকে কত ঋতু চলে গেছে; বসন্তের কত রঙ,
হেমন্তে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।
বসন্তের ফুল দলে দলে কত গ্রীষ্মের বারুদ জ্বালিয়ে দিয়েছে।
তবুও তুমি সেই প্রভাতে সেই দিনের মত সুন্দর সবুজ আছো।
তথাপি তোমার ঘড়ির কাটার মতো সময়কে চুরি করে নিঃশব্দ পদসঞ্চারে,
যদিও দাঁড়েয়ে আছে আজও স্তব্ধ মুক্ত অমবার তবুও তার ক্ষয় আছে।
ভালবাসা তোমার জন্মের আগে রুপের বসন্ত যদি মরে যেত এই পৃথীবিতে,
তোমার বার্ধক্য যদি আর না জন্মাতো এই…!
আপা আপা বলে বাস হেল্পার ডাকে, বাস্তবে ফিরে অহনা। আপা আপনি নামবেন না?
হুম, নামছি বলে অহনা বাস থেকে নেমে পরে এবং নিজ গন্তব্যে হাটতে শুরু করে।
পিছনে ফেলে আসে সকল ভাবনা।
এখন সে কারোও প্রেমিকা নয়, কারোও স্ত্রী নয়, এখন সে ডিভোর্সি নারী।
নিউইয়র্ক / আমেরিকা
২ Comments
অভিনন্দন
very good job; congratulations.