ভূতের নামে বানোয়াট গালগল্প:
লুৎফর রহমান রিটন
ভূতের নামে মন্দ কথা রটিয়ে দিলো নিন্দুকে
নিন্দুকেরাই বাড়িয়ে বলে। বৃত্ত বানায় বিন্দুকে।
সব ভূত তো খারাপ হয় না, অল্প ক’জন হইলে কী?
ভাইবা দেখো ভূত সমাজকে খাটো কইরা কইলে কী!
একটা দু’টোর কীর্তি দেখে ভূতকে খারাপ বইলো না
নিন্দুকদের রটনাকে সইত্য ভেবে চইলো না।
অল্প ক’জন খারাপ মানুষ আছে বলেই ভেবো না–
‘মানুষ খারাপ’ বললে তুমি সেইটা মেনে নেবো? না।
ভূতও তেমন, অল্প কিছু মন্দ ভূতের কারণে–
মানুষগুলো ব্যস্ত থাকে ভয়ের স্মৃতিচারণে!
সেই কবে কোন মন্দ ভূতটা দাঁত খিঁচিয়ে আসছিলো
লম্বা নখের ভয় দেখিয়ে হাঁহাঁ হিঁহিঁ হাসছিলো
কোন ভূতটা নেঁকো সুরে ভূতং গীতি গাইছিলো
অমাবষ্যার নিকস রাতে মটকাতে ঘাড় চাইছিলো
কোন ভূতটা নাচতে নাচতে হাওয়ার ওপর ভাসছিলো
কোন ভূতটা এই যদি ব্যাঙ,পর মুহূর্তে হাঁস ছিলো
কোন ভূতটা সদ্য কেনা মাছটা কেড়ে নিচ্ছিলো
কোন ভূতটা বাড়ি ছাড়ার আলটিমেটাম দিচ্ছিলো
কোন ভূতটা তেঁতুল গাছের এ-ডাল সে-ডাল ঘুরছিলো
কোন ভূতটা উড়িয়ে আঁচল আকাশপানে উড়ছিলো…
এমন অনেক গল্প আছে ভূতকে নিয়ে। বাস্তবে–
কিচ্ছুটি নেই, প্রমাণ চাইলে তেঁতুল তলায় যাস তবে।
গিয়ে দেখিস একটা ভূতও ভয় দেখাতে আসবে না
অনাবশ্যক চন্দ্রবিন্দু লাগিয়ে দিয়ে হাসবে না।
তেঁতুল কিংবা শ্যাওড়া গাছেই ভূতের নিবাস, জানিস তো?
সেখান থেকে পারলে একটা দুষ্টু ভূতকে আনিস তো!
গোরস্থানেও ভূতরা থাকে রটিয়েছিলো নিন্দুকে
সত্যি বলতে মন্দ ভূতের নিবাস মনের সিন্ধুকে!
শ্মশানঘাটেও খুঁজতে পারিস অমাবষ্যার রাত্তিরে
সঙ্গে আবার নিস না যেনো টর্চ-হারিকেন বাত্তি রে…
দেখবি সেথায় মন্দ ভূতের ছায়াও খুঁজে পাবি না
আমি জানি তুই কোনোদিন শ্মশানঘাটে যাবি না।
সেখানটাতে যাওয়ার সাহস কোনো ভীতুর থাকে না
শ্মশানঘাটের ভূত কোনোদিন মারলে প্রমাণ রাখে না।
পিটিয়ে হয়তো ছাল তুলে নেয় দাগ বসায় না শরীরে
সেই ব্যথাকে ভুলিয়ে দেবে নেইকো এমন বড়ি রে!
হোমিওপ্যাথি এলোপ্যাথি কিংবা কবিরাজিতে–
কাজ হবে না, থাকবে ব্যথা ভূতুড়ে কারসাজিতে।
নিন্দুকেরাই রটায় এসব। এসব নিছক রটনা।
কোনোকালেই ঘটেনি তো এমনতরো ঘটনা!
কিছু মানুষ অল্প ক’টা মন্দ ভূতের খপ্পরে–
পড়েছিলো। তাতেই কী না একশো একটা গপ্প রে!
এত্তো এত্তো ভালো ভূতের গল্প কেনো লিখিস না?
নিন্দা ছেড়ে ভদ্র হবার পাঠ কেনো যে শিখিস না!
মানুষগুলো এত্তো পাজি! ‘মিথ্যে কথার কারখানা’।
নেক্সট টাইম তোর নাগাল পেলে মটকে দেবো ঘাড়খানা।
খামচে দেবো কামড়ে দেবো মারবো চাঁটি চিমটিও
সেই প্যাঁদানির দৃশ্য দেখে হাট্টিমাটিম টিমটিও–
হাসতে হাসতে টুপুস করে অক্কা পাবে, অক্কা রে।
ভূতরা চাইলে মারতে পারে প্রতি বলেই ছক্কা রে!
ফের যদি তুই ভুলেও লিখিস মন্দ ভূতের কাহিনি
তোর পেছনে লেলিয়ে দেবো ‘মন্দ ভূতের বাহিনী’।
বছরব্যাপী রাম প্যাঁদানির বিশাল পরিকল্পনা…
(অর্থাৎ কী না মন্দ ভূতের সংখ্যাটা ঠিক অল্প না!)