ভালোবাসার লাইব্রেরি
(সাঈদা আজিজ চৌধুরী)
রুদ্রদিন রুধির আত্মা, শান্তির জল ঢেলে দাও।
হে প্রভু, ভালোবাসার লাইব্রেরি নির্মাণ করে দাও।
অলৌকিক ভালোবাসার, সম্প্রীতির ভালোবাসা
হে প্রভু, ভালোবাসার লাইব্রেরি আরও বিপুল করে দাও।
আত্মার অন্ধকার গুহায় আলোর স্ফূরণ দাও
সংকীর্ণ হৃদয় প্রশস্ত করে দাও, বিভাজন দূর করে দাও
ভালোবাসা সম্প্রীতির সরু গলি আরও বিস্তৃত করে দাও।
জোনাকির ক্ষুদ্র আলো, অন্ধকার সিঁড়ি
আলোর দৈন্যতা অপারঙ্গম মানুষ,
জোড়ায় জোড়ায় মৌলিক মানুষ চাই
এ পৃথিবীর আনাচে কানাচে কোণায় কোণায়।
হে প্রভু, ভালোবাসার লাইব্রেরি আরও বিপুল করে দাও।
সভ্যতার দ্রাঘিমায় আমরা মানুষেরা এখনও বর্বর–
বিবস্ত্র উল্লাস আমাদের লোহিত কণিকায়
সাম্প্রদায়িকতার সূক্ষ্মজাল নীরব বিস্তার
দ্রোহের আগুনে পুড়ে জাতি গোষ্ঠি সংসার
হে প্রভু, ভালোবাসার লাইব্রেরি আরও বিপুল করে দাও।
আলোর শূন্যতায় গড়ে ওঠে হিংসার চাষাবাদ
আদিম প্রতিশোধস্পৃহা জেগে থাকে দিনরাত।
নির্জন অন্ধকারে সভ্যতার পৃথিবীর নৃশংস ছায়া
লোভ লালসার উলঙ্গ নৃত্য।
অদৃশ্য শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানবতার জঞ্জাল
হে প্রভু, ভালোবাসার লাইব্রেরি আরও বিপুল করে দাও।
জননীর জঠরে সম্মোহনী ভালোবাসার জন্ম দাও
সম্প্রীতির আলোকসজ্জায় ভ্রষ্টতাকে নির্বাসন দাও।
হে প্রভু, ভালোবাসার লাইব্রেরি আরও বিপুল করে দাও।
আত্মার গভীরে পরশ পাথরের স্পর্শ দাও
শ্মশান হৃদয়ে আলোকিত প্রাণের মৌলিক অস্তিত্ব দাও
রক্তমাখা দাঁত উপড়ে ফেলে দাও
অস্থির যন্ত্র জীবনের যাতনা পরিসমাপ্তি দাও
অমিয় শান্তির প্রজ্ঞাময় জগত গড়ে দাও।
আর কোনো হিরোশিমা নয়
আর কোনো নাগাসাকি নয়
জেরুজালেম, মায়ানমার, সিরিয়া কিংবা ইউক্রেন নয়,
আর নয় বীভৎস হত্যাযজ্ঞ, বিভীষিকাময় জেনোসাইড।
হে প্রভু, ভালোবাসার লাইব্রেরি আরও বিপুল করে দাও।