সে আমার গোপন কথা
সবিরাম বর্ষণ, কচুপাতায় বারি বিন্দু,
জলহাওয়ার এলোমেলো কথা;
মনাকাশ তছনছ।
তুমিতো আসনি তবু এত আসা যাওয়া,
সে জমানো আলো অন্ধকার;
শুধুই তোমার!
মন্দাকিনী বয়ে যায়,
বুকের মান্দার বনে;
একান্ত গোপনে!
খোঁজ
পৃথিবীর কোণায় কোণায় ছানবিণ,
খড়ের গাদায় সুঁচ অন্বেষণ।
একতুমি ছড়িয়ে পড়েছ,
আনবিক হয়ে।
লাগেজ সহ খোঁজ চলেছে
এক এয়ারপোর্ট থেকে,
অন্য এয়ারপোর্টে।
অধরা
জলে বুনি কবিতা অক্ষর।
পেতাম যদি বটজন্ম কবিতার;
ঝুড়িনামা মাটিতে শিকড়।
নদী জলে অভ্র জোৎস্না কতটুকু স্থায়ী?
বরফে কবিতা লেখা,
গ্রীষ্মে গ’লে যাবে খুব জানি।
ঘূর্ণির পাঁকে পাঁকে প্যাচ,
শান্ত হ’লে অস্তিত্ব কোথায়?
হাতড়ানো চক্ মকি্ পাথরের খোঁজ,
একজন্ম যথেষ্ট নয় মোটে,
পাথরে পাথরে ঘসাঘসি;
কবিতার ফুল যদি ফোটে!
প্রতিযোগিতা
(মালা মিত্র, মিনিয়াপলিশ আমেরিকা থেকে)
জীবনভোর পরেরপর কবি গনের আসর সাজাই,
কখনো অন্যদিকে আঙুল, কখনো তাক নিজের দিকে।
কেবল কাদা ছোঁড়াছুড়, চাপান উতর,কর্দমাক্ত সারা অঙ্গ।
কিবা ক্ষতি ছিল, প্রেমের কাব্য হোতে?
ফুলফুল শ্বাস, আগমে নিগমে আরাম,
হলোনা হয়ে গেল, তরজা খেউর।
হোতেই পারত প্রেমের যাত্রাপালা,
হ’ল কাঁটাতারের বিভক্তি,সুরক্ষিত ভেবে।
রক্তাক্ত করা স্থায়িত্ব কায়েমে।
অমরত্ব পেল না,কেবল রণমত্ততা,
আঘাতে প্রত্যাঘাতে ঝাঁঝরা শরীর।
ইচ্ছেরা
মোক্ষম দিয়েছো টান সুদে আর মূলে,
উদবাস্তু মনের টানা পোড়েন।
কতবার ছিন্নমূল হলে,স্থায়ীত্ব কায়েম?
তবুও সাজাই শিকারা ফুলে ফুলে।
হালচাষ ছাড়িনি এখনো,
আজো স্বপ্নেরা আসে, পাশে বসে,
শষ্যে ভরে গোলা,
দেহের আনাচে কানাচে প্রেম দীপ জ্বলে।
লোভের নবান্ন স্বাদ জিবে,
অনুভবেে স্বর্গসুখ মেলে।
শ্বাসে প্রশ্বাসে আছে
সকাল হলেই চোখ কচলে, উঠি যখন নিত্যদিনই,
সুর বাজে না তোমায় ছাড়া, প্রভাত আমার রয় আঁধারই।
হটাৎ করে বাইরে তাকাই, যাপন কালের ওঠা বসায়,
একলা পাখি কেঁদেই চলে, মনের ঘরে ঘোর একাকী।
ভাতের থালার সামনে বসে, সুখাদ্য ও গলায় ঠেকে,
অমৃতের অনুভূতি, যদি একসাথে খাই পাঁপর সেঁকে।
এত সুখের মলয় বাতাস, বারান্দাতে, উঠোন জুড়ে,
দেহে আমার আগুন ছড়ায়, তপ্ত তাপে
জ্বলে মরি।
ফুল পাতারা কাগুজে রয়, তোমার আসার প্রতিক্ষাতে,
ওগো আমার প্রাণ-প্রিয়, জানের ঘরে,মনের মনোময়।
যখন জানি বন্ধ তোমার সব রাস্তা, ফেরার পথের,
তখন তুমি, শ্বাসে প্রশ্বাসে, আরো কাছের, আরো গভীর।
যে দিন ভেসে গেছে
ছেলেবেলার দেখা সেই বালতি হাতে, দোরে দোরে ঘোরা শ্যাম শ্যামা সাজা,
সস্তার রঙে অপটু হাতে,
মায়া বহুরূপী,চমকে ছিল নতুন প্রাণ।
উনিশ পয়সার টিকিটে দেখা, পৌরাণিক কাহিনির পুতুল নাচ।
ঝ্যাঁকড় ঝ্যাঁকড়, বড় করতাল, বিউগলের শুরুর শব্দে যাত্রাপালা।
নিজের পিঠে ক্রমাগত ছড়ির বারি মেরে মেরে বালকের হাপু খেলা।
বর্ষার ছপাৎ ছপাৎ এক হাঁটু কাদা মাখা জল।
সূর্যের প্রবেশ নিষেধ, ঘন বাঁশবন,আলো আঁধারিতে, মাঝদিয়ে কবরস্থান,
রহস্য রোমাঞ্চ নিয়ে, একা একা ছুটে চলা ও-ই পথ ধরে,ভয়ে ফিরে আসা,সে বিস্ময় আজো টানে।
রোদ জল ঝড়ে, এপুকুর ও ডোবা তোলপাড়,
কতবার, মায়ের হাতে চুলের মুঠি, তবুও আবার।
নিজহাতে কেনা পাঁচপয়সার বাদামচাক্তির স্বাদ, কোথায় আর!
এখন তো ফুড কোড,ফুড প্লাজা, কে.এফ.সি,
হোটেল রেস্টুরেন্ট,
নব্য আবিষ্কারের স্বাদ জিভে নেই আর!
আজ পাপক্ষয় দিনগত, কবে আসবে আবার,
পুরনো সেদিন, নব্য আবিষ্কার।
আমার সে
তোমার যাদুমন্ত্রে পুরীষেে, ফুলের ছয়লাপ,
গ্রাম্য শান্ত ডোবায়, গায়ে গা ঘেঁষে নব শাপলার দল।
দাবদাহে গনগন সূর্যে, ছায়া ঘেরা ছাতার শান্তি,
নবম বর্ষার ঝরঝর গান।
তোমার পরশে শুষ্ক বরফ কঠিন,
গলে জল, পরতে পরতে দাও পূর্ণ আচ্ছাদন।
তোমার আস্কারায় আসে,বসন্ত বাতাস,
কোকিলের মায়াবী কুহু কুহু তান।
ফুলে ফুলে ছেয়ে যায়, অন্দর বাহির,
আরো জোরে ফুঁ দাও আত্মায় আমার,
আমাতে তোমাতে মিশে হই একাকার!!
অভিযান
কোনো একদিন দূর পোতাশ্রয় ছেড়ে,
অভিমুখী পৃথিবী বন্দর।
অভিযাত্রি দল।
নাগা সন্যাসী ভরা সাম্পান।
নোঙড়ের সাথে সাথে হুড়োহুড়ী নামা,
বিস্ফারিত চোখ পলক পড়েনা।
শুরু খেলাধূলা গোল গোল,
ফুলঝুড়ির তারা ফুলে ভরা।
উচ্ছাস উল্লাস।
চুমুকে চুমুকে শেষ ভরা সে সেলাস।
ধরণীর সাত রঙে মনরঙে মিশে,
উড়িয়ে পুড়িয়ে ফাগ বসন্ত বেলায়!
নোনা মিঠে টক-ঝাল,
বেসামাল! বেসামাল!
উগ্র গন্ধ ঔষধি ও ছিল,
অভিজ্ঞতা বাড়ালো।
বহুদূরে গীর্জার ঘন্টায়,
দিন শেষের বাঁশী শোনা যায়,
তরীটি আসছে ধীরে,
নিয়ে যেতে অন্য ঠিকানায়।
mala mitra, 5140, jewel lane north,
Plymoth., Miniapolish, America.
Mala mitra,prantika,block-1flat-1,north baksara sitalatala, howrah-711110
৫ Comments
খুব ভালো লাগলো।
প্রত্যেকটা কবিতা অস্বাধারণ হয়েছে।
very good response. Congratulations.
কবিতা প্রেমে পড়ে গেলাম শ্রদ্বেয়া
অনেক ধন্যবাদ শুভকামনা জানাই