১৫৮ বার পড়া হয়েছে
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় শুভ জন্মদিনে
জন্ম: ৪অক্টোবর ১৯৩১
এছাড়াও সন্ধ্যা মুখার্জী নামে পরিচিত। ভারতীয় নেপথ্য গায়িকা এবং সংগীতশিল্পী, বাংলা সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ।
কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী, তিনি ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণ পান এবং ১৯৭০ সালে জয় জয়ন্তী এবং নিশি পদ্ম চলচ্চিত্রে তার গানের জন্য সেরা নেপথ্য গায়িকার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কলকাতার ঢাকুরিয়াতে ৪ অক্টোবর ১৯৩১ সালে রেলের কর্মকর্তা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এবং হেমপ্রভা দেবীর ঔরসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছয় সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তার পিতামহ একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন এবং পরিবারটি ১৯১১ সাল থেকে ঢাকুরিয়াতে বসবাস করতেন।
প্রশিক্ষণ এবং কর্মজীবন সম্পাদনা
সন্ধ্যা, পণ্ডিত সন্তোষ কুমার বসু, অধ্যাপক এ টি ক্যানন এবং অধ্যাপক চিন্ময় লাহিড়ীর নিকট তার সঙ্গীত প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তবে তার গুরু ছিলেন উস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খান, তার পুত্র উস্তাদ মুনাওয়ার আলী খান, যার অধীনে তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আয়ত্ত করেছিলেন। মনোরমা শর্মা অনুসারে, ” নেপথ্য গানের উজ্জ্বল গৌরব অর্জনের পরেও একজন শাস্ত্রীয় গায়ক হিসাবে সন্ধ্যা, তার জনপ্রিয়তা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছেন।”
যদিও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষিত, তার বেশিরভাগ কাজ বাংলা আধুনিক গানগুলিতে। ১৯৫০সালে তারানা চলচ্চিত্রে একটি গান দিয়ে মুম্বাইতে হিন্দি গান গাওয়া শুরু করেন তিনি। তিনি ১৭টি হিন্দি চলচ্চিত্রে একজন নেপথ্য গায়িকা হিসেবে গান গেয়েছিলেন। ব্যক্তিগত কারণে ১৯৫২ সালে তিনি তার কলকাতা শহরের বাড়িতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি বাঙালী কবি শ্যামল গুপ্তকে বিয়ে করেন। শ্যামল তার অনেক গানের জন্য কথা লিখে গিয়েছিলেন।
তার সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি ছিল হেমন্ত মুখার্জীর সাথে, যার সাথে প্রাথমিকভাবে বাঙালি চলচ্চিত্রগুলির জন্য নেপথ্য গায়িকা হিসাবে তিনি বেশ কয়েকটি গান গেয়েছিলেন। হেমন্ত ও সন্ধ্যা বাংলার মহানায়ক উত্তম কুমার এবং তার অসংখ্য নায়িকা জোড়াগুলির নেপথ্য কণ্ঠস্বর হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন, বিশেষত অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের কণ্ঠে। হেমন্ত মুখার্জির রচনা ছাড়াও রবিন চট্টোপাধ্যায় ও নচিকেতা ঘোষের সঙ্গে তিনি অনেক কাজ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে, যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে আগত লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুদের জন্য তিনি ভারতীয় বাঙালি শিল্পীদের সঙ্গে গণ আন্দোলনে যোগ দেন এবং তাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেন। তিনি বাংলাদেশী সংগীতশিল্পী সমর দাস যিনি বাংলাদেশে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন তার সাহায্যার্থে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান রেকর্ড করেন। কারাগারে বন্দী নতুন বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির উপলক্ষে তার গাওয়া ‘বঙ্গবন্ধু তুমি ফিরে এলে’ গানটি মুক্তি পায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, প্রথম একুশে ফেব্রুয়ারির উদ্যাপন উপলক্ষে ঢাকায় পল্টন ময়দানের একটি উন্মুক্ত কনসার্টে অনুষ্ঠান করা তিনি অন্যতম প্রথম বিদেশি শিল্পী।