মোস্তফা অভি’র বেড়ালের কোয়ারেন্টাইন বইয়ের আলোচনা করেছেন, ইসরাত জাহান।
বইয়ের নাম: বেড়ালের কোয়ারেন্টাইন।
লেখক: মোস্তফা অভি।
আলোচনায়: ইসরাত জাহান
মোস্তফা অভি সুলেখক। যদ্দুর জানি, পাঠক হিসেবেও তিনি রুচিশীল। আকস্মিকভাবে একদিন তার একটি লেখায় চোখ আটকে যায়। লেখক অনুবাদক ফারুক মঈনউদ্দীনের লেখা “হেমিংওয়ের নারীরা” বইটির আলোচনা পড়েছিলাম আলোচিত ওয়েবজিন শ্রী তে। কী দুর্দান্ত লেখা! একজন নোবেলজয়ী লেখকের জীবনে ঘটে যাওয়া চিত্রগুলো যেন মোস্তফা অভির আলোচনায় দেখছি। সেই থেকে মোস্তফা অভির লেখা পড়ছি আর সমৃদ্ধ হচ্ছি। জানা যায় ইতোঃপূর্বে লেখককের দুটো গল্পের বই বেরিয়েছে কিন্তু তা পড়া হয়নি। তবে পত্রিকা সুবাদে তার দুটো গল্প পড়ে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি।
কাব্যশীলনে প্রকাশিত গল্পঃ সিলেকোসিস গল্পটা পড়ে এতটাই অভিভূত হয়েছিলাম, ভাবলাম লেখক এই ধরণের প্লট কোথায় খুঁজে পান! বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের কাছে ওসমানের শিলপাটার কারখানা। সেখানে বড়বড় পাথর ছেনি আর হ্তুড়ি দিয়ে ঝুরে শ্রমিকরা শিলপাটা বানায়। ধীরেধীরে ওদের ফুঁসফুসে জমা হয় পাথরের গুড়া। ওরা সিলেকোসিস রোগে মারা যায়। এই গল্পটি শুরু হয় কোনো এক মাজারের মেহমানখানায়। সেখানে ভুক্তভোগী এক যুবককে গল্পটা বলে। লেখকের ভাষা আধুনিক, বলার ভঙ্গি ধীর আর বহমান স্রোতের মত গল্প এগিয়ে যায়। প্রচুর বিস্তার থাকে মোস্তফা অভির গল্পে।
শ্রী ওবেজিনে পড়েছিলাম গল্প ” নিকট দূরের পদযাত্রা”। আমাদের এই সমাজেরই গল্প অথচ পড়তে গিয়ে মনে হয়েছিল বিদেশি গল্প পড়ছি। মফস্বলের কোনো সরকারি কলেজে পড়া একটি ছেলে আর মেয়ের স্মৃতিকথা নিয়ে গল্পটি। বড় হয়ে উভয়ে সংসার জীবনে পা দেয়। কিন্তু চৌদ্দবছর পর তারা মনে মনে দুজনকেই খোঁজে। তারা সত্যিই একদিন খুঁজে পায়। এক প্রহেলিকা তৈরি করে চেনা জগত থেকে নিজেদের আড়াল করতে। এক অমাবস্যার অন্ধকার রাতে কথক স্ত্রী এবং একপুত্র এমনকি দীর্ঘদিনধরে গড়ে তোলা সোনার সংসার একমুহূর্তে পায়ে ঠেলে চলে যায়। গল্পের প্রতিটি লাইনে উত্তেজনা। কেমনযেন টানটান সুতার মত এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত সুখের আবেস। পাঠক হিসেবে আমি খুবই মুগ্ধ।
ফেইসবুক মারফত জানলাম, “বেড়ালের কোয়ারেন্টাইন ” নামক লেখকের তৃতীয় গল্পের বই আসছে। ভাবলাম, বেড়াল আবার কেয়ারেন্টাইনে থাকে নাকি! হতে পারে এটা লেখকের কোনো প্রতিকী গল্প। পাঠক হিসেবে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সুখের খবর। প্রকাশক আমাদের পরিচিত ভাই হযেত আলী। পাললিক সৌরভ থেকে প্রকাশিত বইটি বহু পাঠকের কাছে পৌঁছে যাক। আমি লেখক এবং প্রকাশক উভয়ের মঙ্গল কামনা করি।
পাঠকের হাতে পৌঁছে যাক “বেড়ালের কোয়ারেন্টাইন”
বইটি অর্ডার করতে পারেন।
১ Comment
congratulations