বিচিত্র আগন্তুক
নাবিল
পৃথিবী যতটা বিচিত্র, তার চেয়েও বিচিত্র
পৃথিবীর মানুষ। একথা অবশ্য সকলেরই জানা।তবে কজনই বা মানুষের মাঝে বিচিত্রতা খোঁজে আর কজনই বা তার খোঁজ পায়।তবে কিছু দিন আগে বিচিত্রতার খোঁজে বের হলে, তার খোঁজও পেলাম। আমার অনুমানে তার বয়স ২৫ থেকে ৩০ এর মধ্যেই। চেহারার গড়ন হালকা ফর্সা, বাদামি আভাস।স্বাস্থ্য স্বাভাবিক। দেখতে সাধারণ হলেও কথা বার্তায় কিছুটা অনন্যতা ছিল। ঠিকানা জানতে চাওয়ার মধ্য দিয়েই কথোপকথন শুরু।এক সময় আমি বলে বসলাম আপনি কি করেন, এদিকে কোথায় যাওয়া হচ্ছে? উত্তরে যা পেলাম তা ছিল অবাক করার মতো। তিনি বললেন, এমনিতে কোনো ঠিকানায় বের হইনি।তবে যেখানে মন চায় সেখানে যেতে পারি।
আমি অবাক হয়ে এক মুহুর্ত ভেবেই পার করলাম।তার কৌতুহলের বশে জিজ্ঞেস করলাম, কোত্থেকে আসা হচ্ছে।
বললেন, কুমিল্লা থেকে।
-তাহলে উত্তর বঙ্গে যে?
-আসলে তেমন কোনো উদ্দেশ্য নেই। এমনি, উত্তর বঙ্গে আগে আসা হয়নি তাই।
-তাহলে ঘুরতে এসেছেন বুঝি।
– বলা যায়।তবে ঘোরাঘুরিটাই মূখ্য নয়।
– আপনি কি করেন সেটা তো জানাই হল না।
-আসলে আমি কুমিল্লায় একটা ব্যাংকে চাকরি করি। ছুটিতে আছি ,তাই আরকি….
– আচ্ছা। তাহলে আপনার মূল উদ্দেশ্যটা কি এই উত্তরে আসার?
-আমার দেখার ইচ্ছা উত্তর বঙ্গের মানুষ কেমন, কেমন তাদের আচার-সংস্কৃতি, তারা কি আদৌ দক্ষিণের মানুষদের মতোই,না বৈচিত্র্য রয়েছে?
-তাহলে কেমন মনে হচ্ছে উত্তরবঙ্গ এবং তার মানুষদের?
-আন্তরিকতায় কিছুটা তফাত লক্ষ্য করেছি।
-আচ্ছা যাই হোক। কিন্তু দক্ষিণ বঙ্গে কেন নয়?
-আসলে উত্তর বঙ্গের কয়েকটা জেলা বাদ দিয়ে দেশের প্রায় সব জেলাতেই আমি পাড়ি জমিয়েছি।
সময় যে অনেক গড়িয়েছে সেদিকে আমার খেয়ালই ছিল না।তাই আমি তৎক্ষণাৎ বিদায় নিলাম। সাক্ষাতে এমন মানুষ আগে কখনো দেখিনি, তবে সেদিনই প্রথম দেখেছিলাম। হয়তো তার সাথে আর সাক্ষাৎ হবে না।যানিনা মুগ্ধ করতে পেরেছি কি না।তবে তিনি ঠিকই আমাকে মুগ্ধ করতে পেরেছেন। এমন মানুষ কোথায় আছে যার কিনা মানুষের জীবন পাঠ করাটাই শখ।তবে একটা মজার বিষয় হচ্ছে এই সুযোগে আমি একটা বিচিত্র মানুষের জীবন পাঠ করে ফেলেছিলাম।তা হয়তো সেই বিচিত্র আগন্তুক বুঝতেই পারেননি।