বাল্যকালের শত্রুতা।
(রিয়াজ খান)
সম্পর্কে সহদর। বয়সে দু’বছরের বড় হলেও একসাথেই বেড়ে উঠা। এক সাথেই পড়ালেখা, খেলা-ধুলা, দুষ্টুমি। শৈশবে বন্ধু নয় শত্রুতা ছিলো সারাক্ষণ।
দু’দণ্ড শান্তিতে আছে দেখলেই গা জ্বালা করে উঠতো, সহ্য হতনা, উঠে পড়ে লাগতাম তার পিছে।
পুকুরে এক সাথে গোসল করতে গেলে আচ্ছা করে পানিতে ডুবিয়ে ধরে পানি খাইয়ে দিতাম। খেলার মাঠে ঝগড়া হলে খুব করে কিল-ঘুষি দিয়ে রাগ মিটাতাম, আবার বাসায় এসে উল্টো নালিশ করে মায়ের বকুনি শুনাতাম। সব সময় ভাবতাম আমি বড়টার চেয়ে বেশি শক্তিশালী, মারামারিতে আমার সাথে কখনোই পেরে উঠবে না সে। ভাই যে, ইচ্ছে করেই আমাকে মারতো না সেটা বুঝার বয়স হয়তো তখনো হয়নি আমার। বার বার নিজে হেরে গিয়ে আমাকে জিতিয়ে দিতো এখন সেটা উপলব্ধি করি খুব। শৈশবে ভাইয়ের সাথে আমার আচরণ দেখে কেউ কখনো বলেনি যে আমি তাকে পঁছন্দ করি। বলার কথাও না। তবে জীবনের একটা সময়ে এসে যখন হিসেব মিলাতে বসলাম, অংকটা ছিলো পুরোটাই অন্যরকম। সেই শৈশব থেকে আজ অবধি তিন তিন বার বাহিরের কারো সাথে মারামারিতে জড়িয়েছি শুধুমাত্র আমার সেই ভাইটিকে হেয় করেছে বলে। ওকে কেউ কিছু বললে কেন জানি মাথায় রক্ত উঠে যায় আমার।
আজ আমি প্রবাসী।
সেও প্রবাসী। লুকোচুরি চলে দু’ভায়ের মাঝে। কখনও আমি ছুটি পাই, দেশে গিয়ে ঘুরে আসি। কিন্তু সেতো ছুটি পায় না। আবার সে দেশে থাকে, আমি ব্যস্ত বিদেশে। এভাবেই ৭ বছর ধরে চলছে আমাদের দুই সহদর এর বাল্যকালের শত্রুতা।