অভিনন্দন শিল্পীকে
নজরুলচর্চায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমির নজরুল পুরস্কার-২০২৩ পাচ্ছেন শিল্পী শাহীন সামাদ। নজরুলচর্চা ও তার প্রসারে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কারে সম্মানিত করা হচ্ছে শাহীন সামাদকে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আগামী ২৪ মে বুধবার সকাল ১১টায় নজরুল পুরস্কার-২০২৩ প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে শিল্পী শাহীন সামাদের হাতে পুরস্কার হিসেবে একটি চেক, সম্মাননাপত্র ও স্মারক তুলে দেওয়া হবে। এর আগে শিল্পী শাহীন সামাদকে নজরুলসংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৬ সালে একুশে পদক প্রদান করে বাংলাদেশ সরকার।
পুরস্কার প্রাপ্তি প্রসঙ্গে শাহীন সামাদ বলেন, ‘কাজের স্বীকৃতি হিসেবে আমি অনেক পুরস্কার পেয়েছি। প্রতিটি পুরস্কারই আমাকে আনন্দ দেয়, উদ্দীপ্ত করে। তবে বাংলা একাডেমির এ পুরস্কারটি আমার জীবনের অন্যতম সেরা পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ এটি নজরুল পুরস্কার। এ পুরস্কার আমাকে নজরুলচর্চায় আরও উদ্দীপ্ত করবে।’
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ছিলেন শিল্পী শাহীন সামাদ। তিনি ৩৬টি দেশাত্মবোধক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘রক্তের প্রতিশোধ রক্তেই নেব আমরা’ ইত্যাদি। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থায় যোগ দেন। তারা বিভিন্ন রিফিউজি ক্যাম্প এবং মুক্তাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে গান শোনাতেন।
শাহীন সামাদ ১৯৫২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। দাদার বাড়ি নোয়াখালীতে। তার পিতা সামসুল হুদা এবং মাতা শামসুন নাহার রহিমা খাতুন।
তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় কাটে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায়। তিনি ঢাকায় রাম গোপাল, ওস্তাদ ফজলুল হক মিয়া, সনজীদা খাতুন এবং ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদের কাছ থেকে সঙ্গীতের তালিম গ্রহণ করেন।
১৯৬৬ সালে ১৩ বছর বয়সে তিনি ছায়ানটে ভর্তি হন। সেই বছর তার বাবা মারা যান। সেখানে লুতফর রহমান, সোহরাব হোসেন ও অঞ্জলি রায় তার শিক্ষক ছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি লন্ডন চলে যান। লন্ডন থেকে ফিরে এসে তিনি সুধীন দাশ এর কাছ থেকে গানের তালিম নেন।
তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন-
“আমি সব সময়ই তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গান পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ছায়ানটে ১০০ শিক্ষার্থীর ক্লাস নিই নিয়মিত। এখানে দেশপ্রেমের ৯টি গান নিয়ে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করেছি। এ ছাড়া প্রতি বছর সারাদেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি কর্মশালার মাধ্যমে তাদের দেশপ্রেমের গান শেখাই।”
১৫২ বার পড়া হয়েছে