প্রণয়ের নিরঙ্কুশ বয়ান
নাসরিন ইসলাম
(কবি ও কথাসাহিত্যিক)
যখন বললে,
তোমার সব লেখা ওরা দেখে
ভাবলাম!
তোমার পথ চলতে সমস্যা হয়!
তোমার মানহানি’র শংকায় চুপসে গেলাম।
বললে যখন কোথাও নেই না
কেনো জানো!
তোমায় যদি ওরা যথাযথ সন্মান
না দেয়, হিংসে করে,
ভাবনায় যোগ হলো
একচ্ছত্র মমত্বে লেপটে রাখা।
কাছাকাছি পাশাপাশির থাকার
ইচ্ছেটা কিছু ক্ষণ অবদমিত করলাম।
অবুঝ মনে বুঝ পেলো আমি বিনা
কেউ নেই, হৃদপিণ্ডে থিতু হয়ে বিন্দুমাত্র
কোন অংশে তোমার!
বললে, এই এই শোন না “হে জান”
মাথায় কোন কাজ করেনা,
জানো কি? আমার সত্তা, মন-প্রাণ
বুঝলাম!
নির্মল মমত্বের চাদরে আবৃত হতে চাও বুঝি,
তাই সেই হতে আদুরী বাতে জড়ায়ে
রাখলাম নিচ্ছিদ্র নিরন্তর।
অতঃপর শুধালে
কেনো যাও?
কে দাঁড়িয়ে আছে ওখানে?
এই অধমের এত্তো এত্তো যতন?
আরাধ্য দেবতার নিচ্ছিদ্র তপস্যা বন্দনার ছোঁয়ায়
নিজকে আর চেঁপে রাখা গেলো না!
নয়ন মেতে উঠলো,
খলবল করে ছুটলো মোহনায়,
সমূদ্র’র অধিকার নিয়ে
অস্তিত্ব আগলে রাখার প্রশ্নে!
যে মমত্বের উপর টিকে আছে
জগৎ-সংসার করছে তরতর,
তার দায় এড়িয়ে যাওয়া?
পঙ্কিলতা করে না ভর,
ভেঙে দেয়া, ভেঙে যাওয়া নয় সহজতর!
ইহা নয় হীনতা, নয় অনাস্থা-অবিশ্বাস
ইহাই প্রকৃত মমত্বের দায়বদ্ধতা
অলিখিত সংবিধান ও
নির্মল মেদহীন অন্তপুরের নিরঙ্কুশ বয়ান!
২৩ জুলাই -২০২২ ইং
লেখক পরিচিতি:
দেশ বরেণ্য কথাসাহিত্যিক,বহুমাত্রিক লেখক সর্বজন শ্রদ্ধেয় জনাব নাসরিন ইসলামের জন্ম বরিশাল জেলার হাসপাতাল রোডে এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে।শিক্ষাভিলাষী ব্যবসায়ী বাবা ও রত্নগর্ভা মায়ের নয় সন্তানের মধ্যে তিনি চতুর্থ।
বরিশাল শহরেই পড়াশুনার হাতেখড়ি, অতপর বরিশাল মহিলা কলেজ, বি এম কলেজ এবং সর্বশেষ বরিশাল আইন কলেজ থেকে আইন বিষয়ে অধ্যয়নের মধ্য দিয়েই তাঁর শিক্ষা জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
তাঁর বর্ন্যাঢ্য কর্মজীবনে তিনি সরকারী ও বেসরকারী অনেক প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তা ছিলেন।
তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো World Bank এর NMIDP, ADB project, DPHE-DANIDA WSSP, Christian Commission for Development in Bangladesh(CCDP), USAID এবং পথ শিশু উল্লেখ্যযোগ্য।
লেখালেখির হাতেখাড়ি শৈশবকাল থেকেই প্রকাশিত সংকলন কিংবা যৌথ গ্রন্থের সংখ্যা বেহিসাবি।তাঁর প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ “বিমূর্ত নক্ষত্র” ২০১৭ একুশে গ্রন্থমেলায় পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ “আত্মার অহম” ঠিক একইভাবে ২০১৮ সালের বইমেলায় ব্যাপকভাবে পাঠক মহলে সমাদৃত হয় এবং ২০২২ সালের গ্রন্থমেলায় তাঁর গল্পগ্রন্থ” স্পর্শ “ব্যাপকভাবে পাঠক নন্দিত হয়।
এছাড়াও ২২০০ টি কবিতা, ১৫০ টি ছড়া, আত্মকথন ৫০টি, গল্প-৫০টি, অনুকাব্য -৫০০টি এবং সমাজসংষ্কারমূলক লেখা-৫০ টির অধিক প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
দেশ বরেন্য লেখিকা নাসরিন ইসলাম মহোদয়ের লেখার উপস্থাপন কৌশল সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে। গতানুগতিক ভঙ্গি পরিহার করে নিজস্ব ভঙ্গিতে লিখেন যা অভিভূত করার মত।লেখার গতিও দুর্দান্ত। যারা তাঁর লেখা পড়েননি পড়ার সবিনয় অনুরোধ রইল।নিভৃতচারী, প্রচার বিমুখ সদালাপী, মিষ্টভাষী এ সাহিত্যিককে নিয়ে হয়তো একদিন গবেষণার তৈরী হবে, এম ফিল, পিএইচডি ডিগ্রীও করবেন হয়তো অনেকেই। আমাদের দেশের কবি সাহিত্যিকগণ মূল্যায়িত হয় গত হওয়ার পরে আসুন আমরা তাঁকে একটু মুল্যায়ন করার চেষ্টা করি। কথা সাহিত্যিকের জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।