পুরুষ তুমি অহংকারী
মাসুমা নিরু
পুরুষ তুমি অহংকারী
তোমার ভেতরে খুব অহংকার
একটা মেয়ে তোমাকে ভালোবেসে নিঃস্ব হলো
নিজের ইচ্ছেয় তাকে নির্বাসন দিলে
তার কোন খবর রেখেছ অবশেষে?
ভালোবেসে দু’জনে একে অপরকে
কিন্তু সিদ্ধান্ত নিলে একাই পুরুষের অহংকারে।
ভালো থাকার সিদ্ধান্তে তুমি পুরুষ
তাই আমাকে হারিয়ে যেতে হলো নীরবে
নিজের ইচ্ছেকে মূল্য দিয়ে অহংকারকে টিকিয়ে রেখেছ।
তোমার কি একজন নারীর প্রয়োজন ছিল না
তোমার কি চলবে নারী ছাড়া?
তোমার ভেতরে খুব অহংকার
তুমি অহংকার করো পৌরুষেয়
জন্ম দিতে পারো নতুন শিশুর
সে অহংকারে নিজেকে পুরস্কৃত করো বার বার
কিন্তু নতুন শিশু জন্ম দিতে সাধতে হবে না আমায়?
কচুর পাতায় বীর্য ফেলে জন্ম দেবে নতুন শিশুর?
তার জন্য প্রয়োজন হবে আমার
আমি গর্ভে ধারণ করি তাই তুমি অহংকারী
আমি নারী তুমি পুরুষ
আমিও তোমাকে ধিক্কার দিতে পারি
আমাকে অবহেলা করো না সে আঘাত সইতে পারবে না
আমি নারী তাই তুমি পুরুষ অহংকারী।
পুরুষ তুমি দাম্ভিক
দাম্ভিকতায় সব কিছুকে করো তুচ্ছ
নিজের চলাফেরায় বুঝিয়ে দিতে চাও তুমি আলাদা,অন্য কেউ
সংসারে আমিও যে কেউ সেটা ভুলে যেতে চাও দাম্ভিকতায়,
নিজের দাম্ভিকতা বজায় রাখতে আমাকে চাও শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে
সংসারে এটা সেটা প্রয়োজনে আমাকে রাখতে চাও ছোট করে
শাসন শোষণ গর্জনে শৃঙ্খলে রাখতে চাও আবদ্ধ করে
তুমি যে পতি সে কথা মনে করিয়ে দাও অর্হনিশি
তোমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে
সে কথা লিখে দিয়েছে অলিখিত দলিলে।
পুরুষ সমাজে দামী
সংসারে মাথার মনি
মা খুব ভালোবাসেন সব সময় আলাদা করে রাখেন
মাতা গর্ভধারীণি লালনে পালনে আদরে সোহাগে বড় করে তোলেন
তাই তোমার এতো দম্ভ,
নারী মাতা ভগ্নি প্রেয়সী
নারীই দিতে পারে সবচেয়ে বেশি।
পুরুষ তুমি সেচ্ছাচারী
করো যা ইচ্ছে, যখন যা মনে হয়,যা খুশি
কাউকে পরোয়া করো না, নিজেই শাহেনশাহ
সংসারে ভালো মন্দ বিচারে স্ত্রীকে রাখতে চাও তফাতে
যখন যা খুশি প্রয়োজন অর্ডার করতে তুমিই মহাজন।
তুমি যা করতে পারো হয়তো পারি না তা আমি
আমি যা পারি তুমি তা করতে পারো কি?
আমাকে এভাবে আঘাতে রেখো না
বার বার নারীর অহংকারে আঘাত হেনো না
আমি যদি প্রতিবাদ করি
তুমি জ্বলবে দিবানিশি।
তুমি কষ্ট দেবে আমাকে?
আমিও কাঁদাবো সমান আঘাতে
আমাকে মারবে অবহেলা দিয়ে?
সে আঘাতে তুমি মরবে নিরবে।
স্ত্রীকে বাচ বিচারে রেখেছ দাসী করে
মূল্যহীন ভাবো সংসারে
আমিই তোমার সংসারের লক্ষী
তোমাকে আমিই মহান করতে পারি
আবার আমিই করতে পারি মুকুটহীন সম্রাট।
আমাকে এতো তুচ্ছ ভেবো না
ম্যাচের ছোট্ট কাঠির বারুদের মতো জ্বালিয়ে দিতে পারি
জগৎ সংসার তোমার ভালো মন্দ, তোমার অহংকার,
তোমার ভালো থাকা,
আমি নারী সব করতে পারি
প্রয়োজনে রণচণ্ডী রূপ ধারণ করতে পারি।
আমি দূর্গা,আমি লক্ষী, আমি স্বরসতী
আমি মা ফাতেমা জগৎ জননী
আমি মাতা মমতাময়ী
মায়া মমতায় বিশ্ব সংসার ভরিয়ে দিতে পারি
আমার মায়ার আঁচলে এ জগৎ খেলা করে
পুরুষ তুমি যতই অহংকারী দাম্ভিক আর সেচ্ছচারী হও না
তোমার সব কিছু চূর্ণ বিচূর্ণ আমি নারী মাতার পদতলে আসি।
প্রফেসরপাড়া, ভেড়ামারা
কুষ্টিয়া।
১ Comment
congratulations