নিশাচর আমি
তসলিমা হাসান
নিশাচর আমার নাম।
কিন্তুু আমি একা নই!
ঐ যে আকাশ!
মিটিমিটি তারা, চাঁদ, জোনাকিপোকা এরা সবাই আমার সাথী,
এরা সবাই নিশাচর।
তাহলে আমি একা কই!
আমিতো সবার সাথে সবার মাঝে বেশ আছি।
আধো আলো আঁধারে চাঁদ আমার সাথে মাঝে মাঝেই লুকোচুরি খেলছে,
তারারা ক্ষণে ক্ষণে দলছুট হয়ে পড়ছে
জোনাকিরা মিটমিট করে আলো দিচ্ছে।
জানালার ফাঁকে আলো আঁধারের খেলা চলছে নিরন্তর।
বাগান থেকে হাসনাহেনার মাতাল করা সুবাস ভেসে আসছে।
আহ্! কি মিষ্টি
মাঝে মাঝে দূর থেকে শেয়ালের হুক্কা হুয়া ডাক সত্যিই অসাধারণ লাগছে।
কুকুরগুলোও ক্ষণে ক্ষণে ঘেউঘেউ করে উঠছে।
নিশাচর হওয়ার না আলাদা একটা মজা আছে,
সে ব্যাপারটা ঠিক অন্য রকম একটা,
সেটা বলে বুঝানো যাবে না।
নিস্তব্ধ রাতে প্রকৃতির সাথে কথা বলার আনন্দটা
অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না!
চাঁদের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে
তোমাকে নিশাচর হওয়াই লাগবে।
নিস্তব্ধ রাতে জানালার গ্রিল ধরে জোস না
স্নাত হওয়ার মাঝে কি অপার সুখ নিহত আছে সেটা যদি জানতে!
আহ্ কি অসীম তার আবেগ।সীমাহীন তার ভালোবাসা,
পৃথিবীর সব দুঃখকষ্ট এক নিমিষে উধাও হয়ে যায়।
জাগতিক সব দুঃখ ভুলে চাঁদ,
তারার সাথে চলে ভাবের আদানপ্রদান।
জোনাকির আলোয় আলোকিত হয় মন জমিন।
তারায় তারায় রচিত হয় প্রেমের অমর কবিতা।
কখন জানি ঘুমপাড়ানির মাসি এসে
আদরের পরশ বুলিয়ে চোখে ঘুম দিয়ে যায় টেরই পাই না।
ঘুম ঘুম আধো চোখে তারারা চুম দিয়ে যায় ক্ষণে ক্ষণে।
রঙিন স্বপ্নে বিভোর আমি রাজকন্যা সেজে পরীদের সাথে করি খেলা।
হঠাৎ চোখ খুলতেই দেখি আবার
সেই বিভৎস মুখগুলো আমাকে তাড়া করছে।
আমি বুঝে গেছি আমি দিনের আলোতে বেমানান।
নিশাচর আমিটাতেই লুকানো আছে আমার প্রাণ।
তসলিমা হাসান
কানাডা,০৬-০৭-২০২৩