ডিজিটাল সমাজের অধঃপতন
নিপা খান
এ কোন পৃথিবীতে আমরা বাস করছি?
এ কোন সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে হাঁটছি? হাটে-মাঠে-ময়দানে-ঘরে, গাছের নীচে, পুকুর পাড়ে হাতে এন্ড্রয়েড মোবাইল নিয়ে ছেলে-মেয়ে সবারই পদচারণা! বিশেষ করে আমাদের দেশের অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলার অবস্থা খুবই করুণ। বর্তমান মহামারীর কারণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় বাচ্চাদের হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি। বলা হয় কোন জাতিকে ধ্বংস করতে হলে তার শিক্ষা ব্যবস্হাকে আগে উৎখাত করতে হবে, তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমাদের প্রজন্মের এ দৈন্যদশা। জানি না এর শেষ কোথায়, অন্তর্দৃষ্টির মহিমার কারণে কোন আলোর রেশ দেখতে পাচ্ছি না। হয়তো ডিজিটালের কারণে বর্তমান প্রজন্ম কিছুটা আপডেট হতে পেরেছে উন্নত বিশ্বের ন্যায়, তবে ভালোর চেয়ে খারাপটা দৃষ্টিআকর্ষণ করছে বেশি।
আমাদের সময়ে যা পরিণত বয়সে জানতে ও বুঝতে পেরেছি তা এক নিমিষেই তারা হৃদয়ঙ্গম করতে পারছে। অভিভাবক হিসেবে আমি আমার কথাই বলছি যা অনুধাবন করতে পারছি। শিক্ষক হিসেবে বলতে পারছি করোনাকালীন সময়ের জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্লাস দেয়া হচ্ছে নিয়মিত, কিন্তু হায়! সেটি দেখার বা বুঝার সময় কি তাদের আছে? পুরোটা সময়ই নিয়ে নিচ্ছে ফ্রি ফায়ার আর পাবজী খেলায়। দখল করে নিচ্ছে তাদের মগজ আর মননে। ব্যত্যয় যে নেই তা বলছি না। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সব অভিভাবক হয়তো সেটি বুঝতে পারছেন না, তারা ক্লাসের নামে কি সত্যিই তা ব্যবহার করছে নাকি অন্য কিছু দারুণ আগ্রহে ব্যবহার করছে! স্বধর্মীয় বিধি বিধান, নীতি নৈতিকতা থেকে দুরে চলে যাচ্ছে নাতো?
একজন অভিভাবক হিসেবে, একজন মা হিসেবে আমি খুবই উদ্বিগ্ন, চিন্তিত ও উৎকন্ঠায় আছি এবং এর ভয়াবহ পরিণতি দেখতে পাচ্ছি। পৃথিবীর সব কোমলমতি আমাদের এই প্রজন্মগুলি যাতে পাপ-পঙ্কিলতা থেকে পরিত্রাণ পায়, আল্লাহ পাক যাতে তাদের মঙ্গল করেন, হেফাজত করেন সেই প্রত্যাশায় রইলাম।
লেখক: কবি ও শিক্ষাবিদ