না ফেরার দেশে
জেরিন বিনতে জয়নাল
মনে পড়ে কী সেদিনের কথা?
নির্জন বৃষ্টিস্নাত পথে, তুমি আর আমি।
নগ্ন পায়ে পিচ ঢালা রাস্তা,
রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিরিষ গাছগুলো যেন দেহরক্ষী।
দু’ধারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আমাদের স্বাগত জানাচ্ছে।
এক ঝাঁক দেহরক্ষীর মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম আমরা।
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি আর মেঘের গর্জন।
মনে পড়ে? হঠাৎ কীভাবে ভয়ে পেয়েছিলে মেঘের গর্জনে!
সেদিন তো কথা দিয়েছিলে,কখনও ছেড়ে যাবেনা,
প্রতিটি বর্ষা আমার সাথে কাটাবে।
শর্ত দিয়েছিলে, নগ্ন পায়ে নির্জন রাস্তায় বড় বড় গাছগুলোকে সাক্ষী করে হাঁটতে হবে।
হাঁটতে হবে তোমার হাতে হাত রেখে,
খোলা কোনো মাঠে বসে দুজনে একসাথে চাঁদ দেখব,
তারা গুণব।
উপভোগ করব রাতের অন্ধকার আকাশ।
কথা দিয়েছিলে, আমার লেখা কবিতার কারণ হবে,
প্রতিটি পঙক্তির ছন্দ হবে,মাত্রা হবে,
আমার জীবন গানের সুর হবে,
আমার আকাশের ধ্রবতারা হয়ে থাকবে।
এমন তো হওয়ার কথা ছিলো না,
তুমি যে আকাশের তারা হয়েছো,
সে আকাশ তো আমার না।
আমি চাইলেও যে সে আকাশে যেতে পারিনা,
চাইলেও তো তোমার হাত স্পর্শ করতে পারিনা,
তোমাকে চোখ জুরে দেখতে পারিনা,
তোমার সাথে গল্প করতে পারিনা,
তোমাকে নিয়ে লেখা কবিতাগুলো শোনাতে পারিনা।
তোমাকে বলতে পারিনা,কতোটা ভালবাসি তোমাকে।
ভালবাসাগুলো আজ নিরবে বয়ে যায়,অশ্রু হয়ে।
অন্ধকারে একাকী বসে তোমাকে অনুভব করি,
হাতরে বেড়াই অন্ধকারে যদি তুমি ফিরে আসো,
না ফেরার দেশ থেকে।