১৭৮ বার পড়া হয়েছে
মাসুম রেজা
শুভ জন্মদিন
২৫ ডিসেম্বর,
আনন্দ ভাগাভাগি
অনাড়ম্বর।
নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, নাট্য নির্দেশক।
তিনি তার টেলিভিশন ধারাবাহিক রঙের মানুষ (২০০৩-০৪) এর চিত্রনাট্যের জন্য বেশি পরিচিত। এই ধারাবাহিকের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নাট্যকার বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ২০০৬ সালের মধুময়রা টেলিভিশন নাটকের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ২০১৬ সালে নাটক বিভাগে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন। রেজা মেঘলা আকাশ (২০০১), মোল্লা বাড়ীর বউ (২০০৫) এবং বাপজানের বায়স্কোপ (২০১৫) চলচ্চিত্রের কাহিনী রচনা করেন। বাপজানের বায়স্কোপ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি ৪০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার এবং শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন।
মাসুম রেজার প্রথম নাটক হল ১৯৭৯ সালে চাঁদ আলীর উপর রচিত পথ নাটক। তিনি ‘দেশ নাটক’ মঞ্চদলের সাথে ১৯৮৮ সাল থেকে জড়িত। তার পূর্ণ মঞ্চ নাটক হল বিরসা কাব্য। তার রচিত প্রথম টেলিভিশন নাটক কৈতর। ১৯৯৬ সালে প্রচারিত নাটকটি পরিচালনা করেন সালাউদ্দিন লাভলু।
২০০০ সালে তার মঞ্চ দল দেশ নাটক থেকে তার রচনায় এবং নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয় নিত্যপুরাণ। এই নাটকে তিনি মহাভারতের চরিত্র একলব্যকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে নিয়ে আসেন। ২০০১ সালে রেজা মেঘলা আকাশ চলচ্চিত্রের কাহিনী ও সংলাপ রচনা করেন। ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন এবং পরিচালনা করেছেন নারগিস আক্তার। ২০০৩-০৪ সালে সেলিম আল দীন এবং তার যৌথ রচনায় রঙের মানুষ ধারাবাহিক নাটকটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই নাটকের জন্য তিনি সেলিম আল দীনের সাথে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ নাট্যকার বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য টেলিভিশন নাটক হল সেকু সেকান্দর, ছায়া ঘড়ি, দিচক্রযান, এবং বিজমন্ত্র। ২০০৪ সালে তিনি তার মঞ্চ দল দেশ নাটকের জন্য রচনা করেন জল বালিকা এবং বাঘাল। তার রচিত ও নির্দেশিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য মঞ্চ নাটক হল আরজ চরিতামৃত, শামুকবাস। ২০০৫ সালে তিনি মোল্লা বাড়ীর বউ চলচ্চিত্রের কাহিনী ও চিত্রনাট্য রচনা করেন। ছবিটি পরিচালনা করেন সালাউদ্দিন লাভলু।এই বছর তার রচনায় তাহের শিপন পরিচালনায় মেঘ রং মেয়ে টেলিভিশন নাটকটি এনটিভিতে প্রচারিত হয়।[৯] ২০০৬ সালে তার রচিত মধুময়রা টেলিভিশন নাটকটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নাট্যকারের জন্য মেরিল-প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কার লাভ করেন।
২০১০ সালে তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে তার রচিত মীন কন্যাদ্বয় এবং গোলকিপার উপন্যাস দুটি অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালে তার রচনায় এবং সৈয়দ আওলাদের পরিচালনায় সাত সওদাগর টেলিভিশন ধারাবাহিক মাছরাঙ্গা টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। এ সময়ে তিনি লন্ডনে থাকায় তিনি সেখান থেকে চিত্রনাট্য পাঠাতেন। দীর্ঘ দশ বছর পর তিনি ২০১৫ সালে বাপজানের বায়স্কোপ চলচ্চিত্রের কাহিনী, সংলাপ এবং রিয়াজুল রিজুর সাথে যৌথভাবে চিত্রনাট্য রচনা করেন। ছবিটি পরিচালনা করেন রিয়াজুল রিজু। ছবিটিতে বায়স্কোপকে পুনর্জীবিত করার সাথে মুক্তিযুদ্ধের খণ্ড চিত্র ও যুদ্ধের দীর্ঘ সময় পরেও রাজাকারের বংশধরের আধিপত্যের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটির জন্য তিনি ৪০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার এবং রিয়াজুল রিজুর সাথে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন। এই বছর তিনি রচনা করেন কুহকজল। এতে বিশ্বাসঘাতকতা, খুন ও প্রবঞ্চনার মধ্য দিয়ে মানুষের সহজাত বর্বরতাকে তুলে ধরা হয়েছে। নাটকটি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্য মঞ্চে মঞ্চস্থ হয়। নাটকটি নির্দেশনা করেন ত্রপা মজুমদার।
২০১৬ সালে তিনি টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের প্রথম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ বছর তার রচনায় এবং সালাউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় দ্য ভিলেজ ইঞ্জিনিয়ার টেলিভিশন ধারাবাহিক আরটিভিতে প্রচারিত হয়। ২০১৭ সালে তিনি সুরগাও মঞ্চ নাটকের নির্দেশনা করেন। নাটকটি একজন বৃদ্ধের গল্প। তিনি গ্রামের সবাইকে, এমনকি অপরাধীকেও বাঁশি বাজানো শেখান। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্য মঞ্চে মঞ্চস্থ এই নাটকের মাধ্যমে নিত্যপুরাণ নির্দেশনার দীর্ঘ ১৭ বছর পর মঞ্চ নাটক নির্দেশনায় ফিরে আসেন।
মঞ্চ নাটক
বিরসা কাব্য
আরজ চরিতামৃত
শামুকবাস
নিত্যপুরাণ (২০০০)
জল বালিকা (২০০৪)
বাঘাল (২০০৪)
কুহকজাল (২০১৪)
সুরগাও (২০১৭)
টেলিভিশন ধারাবাহিক
কৈতর (১৯৯৬)
রঙের মানুষ (২০০৩-০৪)
মেঘ রং মেয়ে (২০০৫)
মধুময়রা (২০০৬)
সাত সওদাগর (২০১৩)
দ্য ভিলেজ ইঞ্জিনিয়ার (২০১৬)
চলচ্চিত্র
মেঘলা আকাশ (২০০১)
মোল্লা বাড়ীর বউ (২০০৫)
বাপজানের বায়স্কোপ (২০১৫)
উপন্যাস
মীন কন্যাদ্বয় (২০১০)
গোলকিপার (২০১০)
তুমুল প্রেমে ছোটভাই
পুরস্কার ও সম্মাননা
জাকারিয়া স্মৃতি পদক, ২০০৪
বাচসাস পুরস্কার, ২০০৪
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ নাট্যকার (ধারাবাহিক) – রঙের মানুষ (সেলিম আল দীন-এর সাথে যৌথভাবে)
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, ২০০৭
শ্রেষ্ঠ নাট্যকার – মধুময়রা (২০০৬)
বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ২০১৬
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০১৭
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার – বাপজানের বায়স্কোপ (২০১৫)
বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার – বাপজানের বায়স্কোপ (২০১৫) (রিয়াজুল রিজুর সাথে যৌথভাবে)