সহধর্মিনী
নাজনীন আহমেদ
প্রথম যেদিন আমার ঘরে এলে মনে হলো,
রামধনুর রং দিয়ে, পৃথিবীর সব ফুলের সুবাস দিয়ে,
সপ্ত সুরের সুর দিয়ে বেঁধে নিলে আমায়।
অল্প সময়ে কি অদ্ভুত ভাবে মানিয়ে নিলে নিজেকে।
গুছিয়ে নিলে সবকিছু নিজের মনের মতো করে।
যখন তখন বাবার চা, সময় মতো মায়ের ঔষধ,
সংসারের কত শত কাজ সামলে সব ঘড়ির কাঁটায়।
তারপর ঘর আলো করে যখন সন্তান এলো,
তখনও সোনার সংসারের কোথাও তোমার,
এতটুকু কমতি পড়েনি ভালোবাসার ছোঁয়ার।
সেই কর্মব্যস্ত দুটি হাত, সেই পরম মমতার দুটি হাত,
আজ নিথর হয়ে পড়ে আছে হাসপাতাল বেডে।
রিপোর্টে কোভিট –19 পজেটিভ এসেছে।
দু’মাস যাবৎ অক্সিজেন সাপোর্টে আই সি ইউ-তে।
অক্সিজেন লেভেল ক্রমাবনতি,
ফুসফুস আশি শতাংশ ড্যামেজে।
অক্সিজেন মাক্স পরা অপলক চাহনিতে
আমার চোঁখে মুখে আজ কি ভরসা খোঁজে?
আমি আর তোমার চোঁখে তাকাতে পারি না।
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে দাড়িয়ে তুমি,
মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছো দিবানিশি।
তোমার এত কষ্ট আমি আর নিতে পারি না।
আমার পাজরের হাড় ক্রমান্বয়ে ভেঙ্গে চলছে।
আমার হৃৎপিন্ড ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
আমি দুমড়ে মুচড়ে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি অনবরত।
আমি আজ বড় অসহায়,
প্রাণাধিক প্রিয় সহধর্মিনী চিৎকার করে শুধু মিনতি জানাই-
ডাক্তার স্যার আমার ফুসফুস টা নিয়ে আপনারা ওকে বাঁচান ।।
আপনারা ওকে বাঁচান।