জীবনের রঙ
শীরীন আক্তার
০৩/১১/২২
অপু তার স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশের গর্বের জায়গা পদ্মা সেতু দেখতে মাওয়া ঘাটে গেছে। সেখানে গিয়ে হঠাৎ দেখা হলো তার ছেলেবেলার বন্ধু আরিফের সাথে। সেও তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে পদ্মার পাড়ে ঘুরতে এসেছে। আরিফ দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে একটু বেশি বয়সেই বিয়ে করেছে।আর অপু দেশেই ছিল। অল্প বয়সে ওর বাবা মারা যাওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষার পর পারিবারিক ব্যবসা করে পরিবারের হাল ধরে। ওর মায়ের অসুস্থতার কারণে মায়ের অনুরোধে তাঁরই পছন্দের মেয়ে রিতাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। কিন্তু দীর্ঘ পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। ওদের কোন সন্তান হচ্ছে না। তাই ডাক্তার দেখিয়েছে। কোনো সমস্যাই নেই । তবে ডাক্তার তার স্ত্রীকে আনন্দে থাকতে ও রাখতে পরামর্শ দিয়েছে। তাই এখানে আসা।
সারাদিন দুই বন্ধু সস্ত্রীক পদ্মা সেতু দেখেছে। পদ্মার পাড়ে তাজা ইলিশ মাছ গরম গরম ভাজা ও সাথে বিখ্যাত ইলিশের লেজের ভর্তা দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছে। ফাঁকে ফাঁকেই পদ্মার বোটের মাঝিরা দুই বন্ধুকে বোটে উঠে ঘুরতে পীড়া দিচ্ছিল। এরই মধ্যে দুই বন্ধুর দুই স্ত্রীর সাথেও বেশ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। অবশেষে দুই বান্ধবীর অনুরোধে ওরা বোটে উঠে।
বোটের মাঝি লাইফ জ্যাকেট পরতে বলে। এরপর বোট ছুটে চলেছে পদ্মা সেতুর পিলার অভিমুখে। সন্ধ্যা আসন্ন। অস্তাচলগামী সূর্যের তেজ কমে আকাশে বাহারি রঙ ছড়িয়েছে। দুই বন্ধু স্মৃতি জাগানিয়া গল্পে মেতে ওঠে। জীবনের কত রঙ। কত বাঁক, কখনও কড়ি কখনো কোমল। রিতা হঠাৎ- ই আরিফের স্ত্রীর পাশ থেকে উঠে বোটের মাথার দিকে এগোয়। বোটে মৃদু দোলানী। টুপ করে লাফিয়ে পড়ে রিতা। তখন মাঝ নদী। তীব্র স্রোত। অপুও মুহূর্তেই ঝাঁপিয়ে পড়ে।