মাহফুজুর রহমান খান
মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা
জন্ম: ১০ মে ১৯৪৯
মৃত্যু: ৬ ডিসেম্বর ২০১৯ বিনম্র শ্রদ্ধা
চিত্রগ্রাহক। পেশাদার চিত্রগ্রাহক হিসেবে তিনি ১৯৭২ সালে প্রথম চলচ্চিত্রে কাজ করেন। তিনি আলমগীর কবির, আলমগীর কুমকুম, হুমায়ুন আহমেদ, শিবলি সাদিকদের মত চলচ্চিত্র পরিচালকদের সাথে কাজ করেন।
চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণের জন্য তিনি নয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আটবার বাচসাস পুরস্কার এবং একবার বিশেষ বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন।
মাহফুজুর রহমান ১৯৪৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকার লালবাগে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম হাকিম ইরতিজা-উর-রহমান খান ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তার পৈতৃক নিবাস ছিল লালবাগের চকবাজারস্থ হাকিম হাবিবুর রহমান খান রোডে। রোডটির নাম তার দাদা হাকিম হাবিবুর রহমান খান নামানুসারে রাখা হয়েছিল। তার চাচা ই আর খান (ইরতিফা-উর-রহমান খান) ১৯৬০-৮০ এর দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের একজন খ্যাতনামা পরিচালক ও প্রযোজক ছিলেন। তাছাড়া প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক ভাতৃদ্বয় এহতেশাম ও মুস্তাফিজ ছিলেন তার ফুফাত ভাই।
স্কুলে পড়াকালীন সময় থেকে তিনি চিত্রগ্রহণে আগ্রহী ছিলেন। তার বাবার ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে তার চিত্রগ্রহণে হাতেখড়ি হয়। চিত্রগ্রহণ শেখার উদ্দেশ্যে তিনি প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক জহির রায়হান নির্মাণাধীন লেট দেয়ার বি লাইট-এর সেটে গিয়েছিলেন। এছাড়া রফিকুল বারী চৌধুরী ও আব্দুল লতিফ বাচ্চুর সেটে গিয়ে চিত্রগ্রহণের বিভিন্ন বিষয় শিখেছেন।
মাহফুজুর রহমান আরেক প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক আব্দুল লতিফ বাচ্চুর শিষ্য। তিনি তার অধীনে সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে ১৯৭০ সালে দর্প চূর্ণ ও ১৯৭১ সালে স্বরলিপি চলচ্চিত্রে কাজ করেন। প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে তার প্রথম কাজ আবুল বাশার চুন্নু পরিচালিত কাঁচের স্বর্গ (১৯৭২)। এছাড়া একই সময় তিনি আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত জল্লাদের দরবার ১৯৭২), আলমগীর কুমকুম পরিচালিত আমার জন্মভূমি (১৯৭৩), মুস্তাফিজ পরিচালিত আলো-ছায়া (১৯৭৪), নুর-উল-আলম পরিচালিত চলো-ঘর-বাঁধি (১৯৭৪), দিলীপ বিশ্বাস পরিচালিত দাবি (১৯৭৪), সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া পরিচালিত একালের নায়ক (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি প্রথম রাজ্জাক পরিচালিত অভিযান চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। পরে আজহারুল ইসলাম খানের সহযাত্রী ও আখতারুজ্জামানের পোকামাকড়ের ঘরবসতি চলচ্চিত্রের জন্য এই পুরস্কার লাভ করেন। তিনি হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত আটটি চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণের কাজ করেন এবং চারটি চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। চলচ্চিত্রগুলো হল শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, আমার আছে জল ও ঘেটুপুত্র কমলা। এছাড়া কোহিনূর আক্তার সুচন্দার হাজার বছর ধরে, গোলাম রাব্বানী বিপ্লব পরিচালিত বৃত্তের বাইরে চলচ্চিত্রের জন্য এই পুরস্কার অর্জন করেন