চাল কুমড়ার মোরব্বা
তানিয়া পারভীন তামান্না
উপকরণঃ
পাকা চালকুমড়া – ০১ কেজি
পানি – ০১ লিটার
চিনি – ১/২ কেজি
ঘি – পরিমাণ মত ( কুমড়া ভাজার জন্য)
এলাচ গুঁড়া – ১/২ চাঃ চাঃ
ডিমের সাদা অংশ – ১ টা
প্রণালীঃ
প্রথমে কুমড়াগুলো কেটে পছন্দ মতো টুকরা করে নিতে হবে। এবার কাটা কুমড়া গুলো ভালো করে ধুয়ে খেজুরের কাটা / কাটা চামচ দিয়ে এমন ভাবে কাঁচাতে হবে যাতে হাতের তালুতে রেখে চাপ দিলে পানি বেরিয়ে যায়।
এবার কাঁচানো কুমড়া গুলো কে পরিমাণ মত পানি দিয়ে ঢেকে বয়েল করতে হবে ২০/২৫ মিনিট উচ্চ তাপে। ৮০% বয়েল হবে। ফুল বয়েল হবে না।
এবার আধা সিদ্ধ কুমড়া গুলো কে একটু ঠান্ডা করে পাতলা কাপড়ে ঢেলে ১.৫ থেকে ২ ইঞ্চি পরিমাণ ফাঁক রেখে ভাল করে বেধে ঝুলিয়ে রাখতে হবে ১ থেকে ১.৫ ঘন্টা /কুমড়া থেকে পানি পড়া বন্ধ হওয়া পর্যন্ত।
এবার একটা পাটার উপরে পরিষ্কার পাতলা কাপড় বিছিয়ে তার মধ্যে কুমড়া গুলোকে একটা একটা করে সাজিয়ে রাখতে হবে এবং এই কাপড়ের অন্য অংশ দিয়ে ঢেকে আরেকটা পাটার সাহায্যে চাপা দিয়ে রাখতে হবে ২/৩ ঘন্টা পর্যন্ত যাতে কুমড়া থেকে সম্পূর্ণ পানি বেরিয়ে কুমড়া ড্রাই হয়ে যায়।
এবার ফ্রাইপ্যানে ঘি গরম করে এর মধ্যে এলাচ গুঁড়া দিয়ে কুমড়া গুলো হাল্কা করে ভেজে উঠাতে হবে। কুমড়া গুলো সাদা সাদা থাকবে।
এবার অন্য হাড়িতে ১ লিটার পানি এবং ১/২ কেজি চিনি দিয়ে সিরা তৈরি করতে হবে। যখন সিরায় একটা বলক উঠবে তখন ১ টা ডিমের সাদা অংশ ফেটিয়ে দিতে হবে। এভাবে ৪/৫ টা বলক উঠার পরে একটা পাতলা কাপড়ে সিরা গুলো ছেঁকে নিতে হবে। এতে চিনির ময়লা গুলো কেটে গিয়ে সিরা পরিষ্কার এবং আরও সাদা হয়ে যাবে।
এবার ভাজা কুমড়া গুলো এই সিরার মধ্যে ঢেলে দিয়ে মাঝারি তাপে ঢেকে সিদ্ধ করতে হবে ১৫/২০ মিনিট। এরপরে চুলার আচঁ মাঝারি থেকে কমিয়ে যতক্ষণ পযর্ন্ত চিনির পানি শুকিয়ে না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত জ্বাল দিতে হবে। এর মধ্যে কয়েকবার নেড়েচেড়ে উল্টিয়ে দিতে হবে।
এবার সিরা খুব ঘন এবং আঠালো হলে মোরব্বা গুলো তুলে একটা ট্রে তে ফাঁকা ফাঁকা করে রাখতে হবে যাতে একটার সাথে আরেকটা লেগে না যায়।
এখন হাড়িতে থেকে যাওয়া সিরা গুলো চামচের সাহায্যে তুলে মোরব্বার গায়ে লাগিয়ে দিতে হবে এবং অপেক্ষা করতে হবে চিনির ঘন সিরা গুলো মোরব্বার গায়ে শক্ত হয়ে জমে যাওয়া পর্যন্ত।
ব্যাস হয়ে গেলো বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী “চালকুমড়ার মোরব্বা”।
নোটঃ
* সিরা ঘন হয়ে আসলে চুলার কাছ থেকে কোথাও যাওয়া যাবে না। খেয়াল রাখতে হবে যাতে চিনি ক্যারামেল হয়ে না যায়। কারন চিনি ক্যারামেলাইজ হলে মোরব্বা লাল হয়ে যাবে।
* চালকুমড়ার উপরের অংশে সাদা পাউডারের মতো আস্তর থাকলে, খোসা অনেক শক্ত এবং বিচি গুলো হলুদ হলে তবেই বুঝতে হবে এটা পাকা চালকুমড়া।
* যতটুকু কুমড়া ততটুকু পানি আর তার অর্ধেক চিনি। এটাই স্ট্যান্ডার্ড পরিমাপ। তবে কেউ চাইলে চিনি আরও একটু বাড়িয়ে দিতে পারে।
পরিচিতিঃ
নারী উদ্যোক্তা, রন্ধন শিল্পী, রন্ধন প্রশিক্ষক তানিয়া পারভীন তামান্না। মানিক গঞ্জের এক সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারের ছোট মেয়ে। তিনি ম্যানেজমেন্ট এ অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করে এ্যাকাউন্টস অফিসার হিসাবে ইউনিভার্সাল গ্রুপ অব কোম্পানিতে ০৩ বছরের অধিক সময় কাজ করেছেন।
এরপরে সূচনা কুকিং স্কুল থেকে ফুড এন্ড বেভারেজ প্রোডাক্টশন, বেকারি এন্ড পেষ্ট্রি প্রোডাক্টশন এবং ভেজিটেবল কার্ভিং এর ফুল কোর্স কমপ্লিট করেছেন। এরপরে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ন্যাশনাল হোটেল এন্ড ট্যুরিজ্যম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে বেকারি এন্ড পেষ্ট্রি প্রোডাক্টসশনের উপরে NCC, BPP/90 কোর্স কমপ্লিট করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল এন্ড রিসোর্ট (এক্স শেরাটন হোটেল, ঢাকা) এ বেকারি এন্ড পেষ্ট্রি সেফ হিসাবে কাজ করেন।
বর্তমানে ঢাকার রামপুরা বনশ্রী থেকে মাল্টি কুইজিন নিয়ে কাজ করছেন তিনি। সব ধরনের হোম মেইড ফুড যেমন ফ্রোজেন ফুড, বার্ডডে কেক,
কন্টিনেন্টাল কেক, ডের্জাট, পিঠা, ফাস্ট ফুড, কনফেকশনারি, কুকিজ, আইসক্রিম, চকলেট, স্পেশাল হালুয়া, থাই ফুড, চায়নীজ ফুড, ইন্ডিয়ানফুড, পাকিস্তানিফুড, মিষ্টি মোগলাই ফুড, বিরিয়ানি, বিভিন্ন রকমের সব্জি রান্না, মজাদার ডাল রান্না, দেশি-বিদেশি সালাদ, ড্রিংকস, সস,চাটনী,কাবাব পরোটা,চিকেন পরোটা, হালুয়া,ছানা তৈরি করা, ক্ষীরসা তৈরি করা, মজাদার ইফতারি, ঈদ স্পেশাল, চিংড়ি স্পেশাল, বিভিন্ন রকমের মাছের স্পেশাল৷ আরও আছে।
এছাড়াও তানিয়া পারভীন তামান্না গায়ে হলুদের ভেজিটেবল কার্ভিং এর অর্ডার নিয়ে থাকেন।
তানিয়া অনলাইন এবং অফলাইন এ কুকিং এবং বেকিং এর ট্রেনিং করাচ্ছেন ট্রেনার হিসাবে।