১) অনামিকা -০৮
তুমি অবহেলায় ফেলে চলে গেলে
পাষাণে বাঁধিলে মোর প্রাণ।
সময় ফুরিয়ে গেল কী যাতনায় ফেলে
তুমি আমায় করিলে নিষ্প্রাণ।
বিজন কুঞ্জবনে ভাসি আঁখি জলে
হেরি তোমায় হয়েছি নি:স্ব।
অনামিকা তুমি কোথায় হারালে
অবাক করে এই বিশ্ব।
তোমার মধুর বচন লাগে সুধার মতো
আজও শুনি তোমার নূপুর ছন্দ।
গোলাপ ফুলের শুভেচ্ছা দিয়েছ কতো
পড়ন্ত বিকেলে করতে দ্বন্দ্ব।
বউকথা কও যাওরে পাখি উড়ে
ঐনা সবুজ শ্যামল দেশে।
ওরে আমার প্রাণ প্রিয়া এসো ফিরে
বাঁধিবে সুখের ঘর ভালোবেসে।
প্রাতে জানাতে শুভেচ্ছা গোলাপ ফুলের
শতদল নিতে তুলে হাতে।
নিত্য স্বপ্ন দেখেছি বাঁধিতে ঘর সুখের
ভেলা ভাসাবো মধুময় বিভাতে।
অনামিকা তুমি সুখ পাখি আমার
নীল আশায় সুখের সঞ্চার।
হাজার তারার ভিড়ের ছবি তোমার
দিয়েছে দোলা হৃদয়ে আমার।
তোমার কাজলকালো চোখের কোণে
দেখেছি কত ভালোবাসার নিশানা।
আজি আষাঢ়ের এই মধু শিহরণে
তোমার বিশালতায় আমার ঠিকানা।
অনামিকা-১৩
অনামিকা তুমি মানবী তা আমি বলবো না
তুমি সুরাইয়ার জ্যোতি তা আমি বলবো না
তুমি পুব আকাশের ধূমকেতু তা বলবো না
তুমি হিমালয়ের হিমকন্যা আমি বলবো না
তুমি রূপ সাগরের রূপের কন্যা বলবো না
তুমি কি নায়াগ্রা জলপ্রপাতের ফলগু ধারা?
নাকি মাধবকুন্ডের অভিরাম শান্ত হিম ধারা?
তুমি কি স্রোতস্বীনির উত্তাল ব্যস্ত উর্মিমালা?
তুমি কি কপোত-কপোতীর ফুলের মালা?
নাকি নীল সরোবরের ঝলমলে পদ্মফুল?
অনামিকা তুমি কি ফাগুনের পলাশ ফুল?
তুমি কি রূপসী উর্বশীর কানের ঝুমকো দুল?
নাকি কাজী নজরুলের কালো বাবরি চুল?
তুমি কি বনলতা সেনের হরিণীচোখের পাতা?
না-কি কৃষকের নয়নঝুলি বুনো মাধবীলতা?
অনামিকা তুমি কি ফাগুনের দখিনা সমীরণ?
নাকি রাজরানীর কাকনের সোনালী আভরণ?
তুমি কি লালমাইয়ের লাল মাটির গড়া পুতুল?
নাকি ক্ষ্যাপী মেঘনার উচ্ছলে পড়া দুই কুল?
অনামিকা তুমি আমার তৃষিত হৃদয়ের বাঁধন
তুমি তিমিরে সুধাকরের হাসির নিরব কিরণ।
তুমি সরল চপলা হরিণীর চোখের মণি
তুমি অবুঝ মনের সুধাময় প্রেমের খণি।
তুমি লাবন্যময়ী অসীম ভালোবাসার আহরণ
তোমার স্পর্শে জাগে হৃদয়ে প্রেমের শিহরণ।
অনামিকা তুমি বিজন কুঞ্জবনে গোলাপ ফুল
তুমি শত ভ্রমরের আকর্ষণ লক্ষ তারার মূল।
________________________
প্রভাষক (অব:), পদার্থ বিজ্ঞান, লাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজ, লাঙ্গলকোট, কুমিল্লা