বালিকা হলো বঁধূ
কামরুন নাহার
সবে মাত্র ১৫ বছর চলে নাম তার জেসী।মেয়েটি খুবই মেধাবী। গ্রামের মেয়ে সহজ সরল স্বভাবের। মেয়েটি দেখতে খুবই সুন্দরী। গ্রামের আলো বাতাসে প্রকৃতির সাথে হেসে খেলে তার বেড়ে ওঠা। পড়াশোনা করে বড় হবে এটাই জেসীর স্বপ্ন। কপাল তার ভালোই ছিল। সে এস এস সি পরীক্ষা দিলো। জেসী ভাবতে ভাবতেই মাকে বলল,
মা আমি একটু কোথাও বেড়াতে যাব।
মা, মানা করলেও জেসীর আবদার না রেখে আর উপায় কী আছে? হঠাৎ জেসীর কাকা বাড়ি এলো । তিনি ঢাকায় থাকেন। জেসী তার কাকার সাথে এই প্রথম শহরে যাচ্ছে। কি যে আনন্দ! জেসী শহরে যাচ্ছে সব কিছু ঘুরে ঘুরে দেখবে। কত কী ভাবে সেই বালিকা মেয়েটি।বিকাল তখন ৫ টা জেসী কাকার বাসায় এসেছে। নতুন জায়গা পরিবেশ অন্য রকমের। হঠাৎ জেসীর জীবনে একটা ঝড় এলো। কারন একটি ছেলের চোখ পড়লো জেসীর দিকে। জেসীর দিকে তাকিয়ে আছে কী যেনো বলবে মনে হয়। কাকাঃ জেসী তুমি খেতে আস। জেসীর উত্তর দেয় আসছি কাকা।এভাবে ২ দিন পার হলো তার মধ্যে জেসীর বিয়ের প্রস্তাব এলো। জেসী তো ভয়ে অস্থির । বার বার মাকে মনে পড়ছে মা মানা করলো জেসী শুনলো না।
জেসীর কাকীর পছন্দ ঐ ছেলেটির সাথে বিয়ে দিবে।ছেলেটা দেখতে সুন্দর কিন্তু বয়স বেশি ও বিবাহিত। জেসীর বয়স কম, কান্না করে কী করবে ভেবে পাচ্ছে না।এমন সময় তার ফুফাতো বোন এলো জেসীকে তাদের বাসায় নিয়ে যাবে বেড়াতে। জেসী রাজি হলো। জেসীর কাকা ভালো মানুষ। তিনি চান জেসী পড়াশোনা করে বড় হোক।জেসী তার বোনের সাথে চলে গেল। যে ছেলেটা বিয়ে করতে চেয়েছিলো সে পাগল প্রায় যেভাবেই হোক বিয়ে জেসীকেই করবে তার চিন্তা।
বোনের বাসায় কয়েকদিন ভালোই ছিল। একদিন সকালে একটি ছেলে এসে হাজির। জেসী ঘুম থেকে ওঠে ব্রাশ করছিলো। হঠাৎ জেসীর সামনে এগিয়ে এসে সালাম দিয়ে বলল, আপনি ভালো আছেন? জেসী উত্তর দেয় কে আপনি? আপা এসে বলল, কি ভাই আপনার খবর কি? আপনি আসেন না কেন? জেসীকে তার আপা পরিচয় করিয়ে দেয় তার স্বামীর বন্ধু। এখানে ও একই অবস্থা কিছু দিন পর ছেলেটা ভালোবাসার কথা বলে। জেসীর ভালো লাগছে না কিছু ই বার বার মাকে মনে পড়ছে।বাড়িতে যাওয়ার জন্য জেসীর মন ছটফট করছে। এস.এস.সি রেজাল্ট বের হবে ১৫ দিন পর। মেয়েটির কপালে সত্যি সত্যিই ঝড় নেমে এলো কাকার বাসার সেই ছেলে টি লোকজন নিয়ে জেসীর বোনের বাসায় চলে এলো । জেসী ভয় পেল, সে একটি রুমে লুকিয়ে পড়লো আর যারা আসলো সবাইকে তার আপু বলল, আমার বোনকে মামা দেশে নিয়ে গেছে এখানে নাই।ছেলে টি কিছুক্ষন থেকে নাস্তা করে চলে গেল। হুমকি দিয়ে গেল মিথ্যে বললে বোনের স্বামীকে তুলে নিয়ে যাবে । আপু জেসীকে চুপটি করে রুম থেকে বার করে শান্তনা দিলো ভয় নাই। এভাবেই আরও দুটো দিন কেটে গেল।
একদিন বিকেলে ওই বোনের স্বামীর বন্ধু এলো সব শুনলো। নাম তার সুমন।ভদ্র সভ্যশান্ত ছেলে আপুর বক্তব্য। একদিন এই সুমন ছেলে টি ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। জেসীর চনচলা মন কি করবে ভাবতে লাগলো। এমন সময় জেসীর বাবা এলো । জেসীতো অভাক! বাবার মুখে সব ঘটনা শুনে আপু দুলাভাই সহ সবাই চিন্তিত। কারণ ওই ছেলেটা বিয়ে করতে জেসীর গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। জেসীর বাবা মা চিন্তায়।আপাঃ মামু আপনার সাথে কথা আছে। জেসীকে আপা অন্য রুমে যেতে বলেন।আপু সুমন ছেলেটার কথা বলতেই দরজার সামনে থেকে আসসালামু আলাইকুম আপা বলে ভিতরে প্রবেশ করলো। বাধ্য হয়ে সবাই মিলে জেসীকে সুমন নামের ছেলের কাছে বিয়ে দিলো।ছেলেটা ভালো মানুষ হিসেবে। বিয়ের পর জেসীর এস এস সি তে প্রথম বিভাগে পাশ হলো বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল। অবশেষে একদিন বালিকাই বধূ হলো।
১ Comment
very nice story; congratulations.