বাংলাদেশে আধুনিক সাংবাদিকতার পৃষ্ঠপোষক, অধুনালুপ্ত দৈনিক আজকের কাগজের সম্পাদক কাজী শাহেদ আহমেদ আজ সন্ধ্যায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
সংবাদপত্র প্রকাশক-সম্পাদক, ক্রীড়া সংগঠক, ব্যবসায়ী নানা পরিচয়ে পরিচিত ছিলেন তিনি।
বিলুপ্ত আজকের কাগজের প্রকাশক ও সম্পাদক, ক্রীড়া সংগঠক, ব্যবসায়ী কাজী শাহেদ আহমেদ আর নেই।
ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যায় ৭টা ১৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
তার মেজ ছেলে কাজী আনিস আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবা অসুস্থ ছিলেন দীর্ঘদিন। আজকে সন্ধ্যায় ইন্তেকাল করেছেন।”
জেমকন গ্রুপের চেয়ারম্যান কাজী শাহেদের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, মঙ্গলবার বাদ জোহর ধানমন্ডি ৭ মসজিদে, বাদ আছর গুলশান আজাদ মসজিদে কাজী শাহেদের দুটি জানাজা হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
কাজী শাহেদের বড় ছেলে কাজী নাবিল আহমেদ যশোর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি। তার মেজ ছেলে কাজী আনিস আহমেদ বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউনের প্রকাশক। ছোট ছেলে কাজী ইনাম আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অন্যতম পরিচালক।
কাজী শাহেদের জন্ম ১৯৪০ সালের ৭ নভেম্বর যশোরে। প্রকৌশল পড়ার পর তিনি ১৪ বছর সেনাবাহিনীতে ছিলেন। লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে অবসর নেওয়ার পর ১৯৭৯ সালে ‘জেমকন’ গ্রুপ গঠন করে ব্যবসায় নামেন তিনি।
গত শতকের ৮০ এর দশকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক খবরের কাগজ কাজী শাহেদের মালিকানায় প্রকাশিত হত। পরে তা দৈনিক পত্রিকা আজকের কাগজে রূপ নেয়। প্রথমে নাইমুল ইসলাম খান সম্পাদনা করলেও পরে প্রকাশনার পাশাপাশি সম্পাদকের দায়িত্বও নেন কাজী শাহেদ। দেড় দশক আগে বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত আজকের কাগজের প্রকাশক-সম্পাদক ছিলেন তিনি।
সংগীত শিল্পী আমিনা আহমেদের স্বামী কাজী শাহেদ আহমেদের বিচরণ সাহিত্য অঙ্গনেও ছিল। তার লেখা উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘ভৈরব’, ‘পাশা’, ‘দাঁতে কাটা পেনসিল’ ও অপেক্ষা’। এছাড়া সংবাদপত্রে কলামও লিখতেন তিনি।
ক্রীড়া সংগঠক কাজী শাহেদ দীর্ঘদিন আবাহনী ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার ছেলেরাও এই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। যশোরে একবার সংসদ নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন কাজী শাহেদ। এখন তার ছেলে নাবিল সেখানে সংসদ সদস্য।
বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগান প্রতিষ্ঠায় কাজী শাহেদের অবদানের কথা বলা হয়। পঞ্চগড়ে বিশাল চা বাগান গড়ে তোলার কৃতিত্বও তার।
কাজী শাহেদ ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব), মীনাবাজার, কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা।