তুমি যদি চাও
তুমি যদি চাও আকাশ হবো
ভেজা জোছনায় স্নান করবো
তুমি যদি চাও দিগন্ত হবো
মেঘপালকে সাঁতার দেবো
তুমি যদি চাও জলরাশি হবো
বিন্দু বিন্দু প্রেম দেবো
তুমি যদি চাও ফুল হবো
তোমার শ্বাসে ঘ্রাণ দেব
তুমি যদি চাও অনুভূতি হবো
তোমার মনের খোরাক দেব
তুমি যদি চাও তারা হবো
আঁধার রাতে পথ দেখাবো
তুমি যদি চাও বাইজী হবো
যুবতীর নাচে প্রাণ জুরাবো
তুমি যদি চাও বাঁশি হবো
তোমার সুরেই সুর দেবো
তুমি যদি চাও হারিয়েও যাবো
না ফেরার দেশে পথ হারাবো।
একান্ত কথন
কত যে দিন গিয়েছে কেটে
অন্ধকারে একা
আমার দূয়ারে এসেছে ভোর
পাইনি তোমার দেখা।
দিনের আলোতে খুঁজেছি যারে
গহন হৃদয় মাঝে
মুখ ফিরানো সে-ই আজ আসে
আমার নিভৃত সাঁঝে।
কেউ তো জানে চাঁদের নৃত্যে
অথবা অমানিশায়
বাজায় কাঁকন অশ্রুতে বোসে
তোমারই গান গাই।
সেই যে তোমার মায়ামাখা হাসি
এক বসন্তে দেখা,
সেই তো আমার চেতনে- হৃদয়ে
অমর প্রেমের রেখা।
এখনো ফুলেতে সবুজ ফসলে
তোমারই ছায়া ভাসে
বলে দাও তুমি আর পথিকেরে
চলে যাও পরবাসে।
এখনো তোমার প্রতীক্ষাতেই
আমার অনন্ত সুখ
এখনো আমার অবুঝ ব্যথাতে
খুঁজি যে তোমার বুক।
জানি, কখনো ফিরবে না আর
সাথে নিয়ে অভিমান,
তবুও আমি ভালবেসে গা’বো
তোমার নামেই গান।
আসুক না ঝড়, প্রখর তপন
আমার মাথার ‘পরে,
স্বপনে না হয় দেখে যাব সুখে
ঐ আস ফিরে ঘরে।
অবুঝ কান্না
তোমাকে ভালোবেসে
মেটেনি আশা,মিটলো না সাধ;
জীবনের মাঠ জুড়ে …
বুনোলতার মত কাঁটাময় অবসাদ।
কেন গেলে চলে দূরের দূর?
কি এত অভিমান?
কি বল অনুরাগ?
আমার কি ছিল– কোন কিছু ভুল?
আজো ভাবি মনে মনে
জানে- চাঁদ আর ঝরা বকুল।
স্বপ্ন তো ছিল বেশ–
তোমার হাত ধরে অপূর্ব মায়ায়
উচ্ছল খুশিতে
দেখে যাব– নক্ষত্রের আকাশ;
আমার চোখ আজ নদী,
বুকের গহনে অনাবাদী দীর্ঘশ্বাস!
এখনো বোসে থাকি
তোমার পথ চেয়ে গভীর মায়ায়
চুপচাপ একা– একাকী!
তুমি কি মান ভুলে–
আসবে ফিরে?
বল না, বল; বল না-
তুমি আবার ফিরে আসবে কি!
দীর্ঘশ্বাস
পড়ে আছে আকাশ একা
সীমানাহীন অন্ধকার,
নীরব-নিথর মাটির বুকে
শব্দবিহীন হাহাকার!
ব্যথার ফাঁদে বন্দিনী চাঁদ
বুকের ভাঁজে দীর্ঘশ্বাস,
সবুজ ঘিরে ফুল- ফসলে
কুহেলিকার উপহাস!
ঝরছে পাতা শাখা থেকে
কেউ রাখে সেই খবর,
কত হাসি চোখের পাতায়
কান্না জলে দেয় কবর!
এই পৃথিবী চলছে শুধুই
স্বার্থবাদের ব্যঞ্জনায়,
মহাকালটা সাঁতার কাটে
রক্ত নদীর মোহনায়।
যাচ্ছে তবু কালের চাকায়
সময় ছুটে ঊর্ধ্বশ্বাস,
নিঃসঙ্গতায় বুকের ভেতর
আমার জমে দীর্ঘশ্বাস!
ভুল প্রেম
কত প্রাণ দেখলাম এ ধরায়
কত বিরহে, কত আনন্দে
কত বসন্তে- বৈশাখে- বরষায়,
সুখে- দুঃখে কত হাস্য- লাস্য উপমায়!
এ এক আশ্চর্য সম্পর্ক-
স্বপ্নে- গন্ধে অপরূপ মধুরিমায়।
প্রেমিক যে জন বেসেছে ভাল
দেখেছি দিনশেষে-
চোখে তার ঘন রাতের কালো
কখনো আবার বিপুলা অশ্রু রাশি রাশি,
কখনো অকারণ জীবনের বলিদান;
আস্থা- অহম রুগ্ন- শীর্ণ পরবাসী-
কোন এক অচেনা মোহনায়
জানিনা এর শেষ কখন কোথায়।
কখনো অজান্তে-
ঋষিবর প্রেমিকের অবুঝ চোখের জলে
আমার দুটি চোখ ভেসেছে ব্যথায়
জ্বলেছে বুনো আগুন কোমল বুকের তলে।
ভেবেছি একা– কোন সে মোহ মায়ায়
নিরন্তর ভাসা এই ভালবাসায়!
মাঝে মাঝে মনে হয়–
বহু মানবের প্রেম দিয়ে ঢাকা,
বহু দিবসের সুখে- দুঃখে আঁকা
এই প্রেম প্রেম খেলার করি প্রতিবাদ;
আবার ভাবি গোপনে নিরালায়–
কেন মিছে এত ক্রোধ, এত দ্রোহ?
যার যা আছে থাক না তা থাক-
ধীর পায়ে নেমে আসা শুদ্ধতায়।
আজ বলি আপনার মনে একা-
থেমে যাক ভুল প্রেম, ব্যথা- ক্রন্দন
সত্যালোকে ভরে থাক জীবন
ছিঁড়ে যাক মরীচিকাময় মিছে বন্ধন।
১ Comment
Congratulations