১) বাংলার রূপমাধুরী
আমার দেশ,আমার সোনার বাংলা
তোমার শোভায় চোখ জুড়ায়,
বারবার মুগ্ধতায় ডুবি রূপ-মাধুরিতে
চেতনায় প্রাণের স্পন্দন কুড়াই।
জন্মেছি বাংলার মাটিতে,ধন্য ‘জীবন’
অহর্নিশি চাই তোমার সাফল্য-সমৃদ্ধি,
বুকে রক্তক্ষরণে ভাসি দুর্ভিক্ষ,জঞ্জালে
আত্মার নিগুঢ়ে স্বপ্নবাসনা প্রভৃতি।
সোঁদা মাটির ঘ্রাণে স্নাত হই সদা
মুক্ত-বাতাসের প্রবাহে শান্তির প্রাচুর্য ,
গ্রাম বাংলার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য
ভাবায় কোনো চিত্রকরের ভাস্কর্য।
কী অপরূপ রূপে বিমোহিত,আলোড়িত
বৈচিত্র্যময় উপলব্ধির সূক্ষ্ম কোষাগার,
নদীর মোহনায় একাত্মতায় প্রেম পূজারী
জ্যোৎস্নায় চাঁদের বাঁশির অন্তঃসার।
সবুজ মাঠ প্রান্তর,ঝিলের জল
শাপলার শালুকের নন্দন চিত্রাংকন,
বিমোহিত অন্তর,পরিতৃপ্ত আঁখির তীর
বাংলা আমার স্বপ্নসারথি অঙ্কন।
২) মনের পাতা
বাতাসে ভাসে কথার ধ্বনি,সাগরের হাওয়া
কান পেতে রাখে নিরবধি,মনের পাতা সযত্নে
স্মৃতির কৌটা খুলে দেখে
ভালোবাসার মনিরত্ন মালাখানি।
অবাক করে সংগোপনে প্রিয়মুখের পোর্ট্রেটের হাসি
বিস্ময় ভরা চোখের চাহনি—
অনুভূতিতে ঝড়ের তাণ্ডবে খেলে।
এই অবেলায় প্রেম প্রলয়ের মহা মাতলামি
মনের পাতায় কত আঁকিবুকি চৌদিকে –
-বেহিসেবি কারু অংকন।
স্বপ্নের দোরগোড়ায় শুধুই আশাহত ‘ঈশানী মেঘ’
কতকাল রইবো নিস্তব্ধতার অক্টোপাসে জড়িয়ে,
প্রেম প্রহেলিকা নিজস্বতায় কেবলই তলিয়ে নেয়
বিমর্ষতায় মনের পাতা ঘুণ পোকায় খায়।
রাতের আকাশ নির্ঘুম নয়নে চুমু দেয়
চাঁদের হাসি আঁখির জলে সঙ্গী হয়–
কোথায়! অসার তুমি চন্দ্রিমায় প্লাবন ছড়িয়ে
নির্লিপ্ত বিহারে দাঁড়িয়ে নৈঃশব্দ্যে ধ্যানমগ্ন এই আমি–
কত প্রহর কেটে গেলো পুষ্পাঞ্জলি হাতে লয়ে
অনন্ত বলয়ে প্রেমের মোহর দিবানিশি কুড়ায়ে।
৩) অনুভবে জাগ্রত বিবেক
স্রষ্টার অর্পিত যত ভার
অনুভবে সরল, সোজা,
নিজের রক্ষণে জমাকৃত ভার
বোধোদয়ে কঠিন বোঝা।
এ বোঝা থেকে নিষ্কৃতি চাই-
মুক্তির পথ নিরুদ্দেশ,
খুঁজে পাই না কতকাল ধরে
দিবে আমায় সৎউপদেশ।
ভারের টানে চলছি ভ্রান্ত-কূলে
অনিশ্চিত ধাবিত পথে,
মহাশক্তি থামাও এবার আসক্তি
দুর্গমতার ঘর্মাক্ততা থেকে।
নিজের সঞ্চিত বিরহ,বেদনা
নিষ্প্রভ হোক নিঃশেষে,
কষ্টের জ্বালামুখের আত্ম দহনে
বজ্রানলে পুড়ছি পরিশেষে।
খেলাঘরের এই পরিণতির নেই
কোনো ফল, প্রতিশ্রুতি,
বের হয়ে আসা অবশ্যম্ভাবী
স্রষ্টার করুণার প্রত্যাশী।
প্রভুর দেওয়া নির্ধারিত কষ্ট
এ এক প্রকার দান,
আত্মশুদ্ধিতার নিগূঢ় তপস্যায়
পুণ্যতায় ভরে প্রাণ।
যত্রতত্র সর্ব পাওয়াকে করেছি
নিজের সম্বলে জমা,
এই জমার হিসেব কি কখনো
দিতে পারবো!?
হবে কি ক্ষমা??
৪) উদাসী প্রতীক্ষা
উদাস-নয়ন আটকে পড়েছে কোন্ মোহমায়ায়!
অন্তহীন খোঁজার অভিলাষ নীরবে ধূপছায়ায়,
আপনা মাঝে লুকায়িত অনুসন্ধিৎসু ফলাফল
সর্বজনের মাঝে কুূহু-পিয়াস প্রহেলিকার চলাচল।
একাগ্রতার অসীমে নিমগ্ন গভীর তথ্যকথায়
জলপদ্ম শোভা বর্ধনকারী অপূর্ব নান্দনিকতায়,
চেনাসুর কোন্ অলকায় আদৃত প্রতীক্ষায়
নিয়তির নিত্যনতুন প্রাপ্তি নিষ্ফল সমীক্ষায়।
অন্তরীক্ষে মেঘরাজ্য উদাসী মননে সর্বস্ব
কালের গহব্বরে অন্তর্ধানে সময়ের জীবাশ্ম ,
উদাসী প্রতীক্ষা বিপুলা পৃথিবীতে নিঝুম-দ্বীপে
আত্ম ক্ষরণের দহন জ্বালা নিয়মিত বপনে।