অমানিশা
মেঘাচ্ছন্ন আকাশ
এক টুকরো চাঁদের ভূতুরে আলোয়
চেয়ে থাকি অপলক!
চরকা কাটা কোন বুড়ি দৃশ্যমান হয় না,
বরং এক পরিশ্রান্ত নারীকে দেখি
মমতা ভরা চোখে৷
দুহাত দিয়ে চোখ কচলিয়ে
আবারো চেষ্টা করি গভীর দৃষ্টিতে
সেই মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, ফ্যাকাসে চাঁদ আর
সেই রহস্যময়ী নারীকে!
নিজেকে আবিষ্কার করি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন,
জীর্ণ এক রান্না ঘরে৷
যেখানে নিভু নিভু প্রদীপের আলোয়
আমার স্বপ্নের বাতিঘর, মমতাময়ী মা
একমুঠো ভাত রাঁধছেন৷
বাটনায় পটলের ফেলে দেয়া ছাল দিয়ে
কী ভীষণ যত্নে ভর্তা করছেন!
প্রচন্ড ক্ষুধায় গরম ভাত আর
ভর্তার ঝালের গন্ধ যেন নেশা ধরায়৷
থালাটাতে ভাত আর ভর্তা দিয়ে মা বললো,
আজ বাজার করা হয়নি বাবা৷
কষ্ট করে খেয়ে নে৷
কাল টাকা নিয়ে ভালো করে বাজার করিসতো!
দেখতো বাবা বাড়িতে টাকা থাকার পরেও
কেন যে এমন হলো বলতো?
বুঝেছিস ব্যাটা! বয়স! সব ভুলে দেয়৷
আমি জানি কাল কেন আগামী চারদিনেও বাজার হবে না!
মায়ের কাছে টাকা নেই৷
ছোট হলেও বুঝি
মা সান্তনা দেয়, স্বপ্ন দেখায়৷
মায়ের এই মিথ্যা আশায়
আশাহত হইনা মোটেও৷
কেননা রাষ্ট্র প্রতিদিন এমন মিথ্যা বলে৷
পার্থক্য শুধু মা স্বপ্নের বাতি জ্বালায়
আর রাষ্ট্র অমানিশায়৷
লুটেরা হবো
আর কতটা কাপড় নামালে
উলঙ্গ বলে?
কতবার শরীর বেচে দিলে
পতিতা বলে?
কতদিন না খেয়ে থাকলে
অনাহারী বলে?
কতটা প্রতিবাদহীন থাকলে
দেশপ্রেমী বলে?
কতগুলো মিথ্যা বললে
রাজনীতিক হওয়া যায়?
কতটুকু চোখের জলে
ভাত পাওয়া যায়?
কীভাবে একটি কোটা নিয়ে
চাকরি পাওয়া যায়?
কোথায় আবেদন করলে
লেখক তকমা পায়?
আমি জানি না!
কিছুই জানি না!
এখন শুধু মরিয়া হয়ে উঠেছি
One man army হবো বলে৷
আমার স্ত্রীকে ‘বাসন্তি’ আর
সন্তানদের ‘আসমানী’ হতে দেবো না কখনো৷
আমি নুরুলদিন, সূর্যসেন, ভাসানী
নজরুল কিংবা বঙ্গবন্ধু হবো৷
হবো বিপ্লবী, যদি তোমরা লুটেরা বলো!
ক্ষতি কী?
আমার একটি জীবনের বিনিময়ে যদি
আরো কিছু জীবন বেঁচে যায়!
আমি তাই করবো৷
অসীম সাহসী বাঙালিরা চিরদিন
প্রতিবাদী ছিলো
আর আমিও তো একজন বাঙালি৷
৬ Comments
Many many thanks
good poetry; congratulations
Congratulations
অমানিশা কবিতা পুরোটা আসেনি৷ দয়া করে ঠিক করবেন?
Thanks
Nice