আজকে কবি আলী মুহাম্মাদ এর শুভ জন্মদিন:
জন্ম:
কবি, গবেষক ও দার্শনিক আলী মুহাম্মাদ ১৯৮৫ সালের ২০ শে অক্টোম্বর বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার ‘মাজিহাট’ গ্রামের সম্ভ্রান্ত পাঠানবাড়ী ‘সাত ভাই পাড়ায়’ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোঃ আমোদ আলী পাঠান এবং মাতার নাম মোছাঃ রোমেলা বেগম।
সাহিত্য চর্চা:
তাঁর প্রথম কাব্য “যৌবন-২০০৬” সালের একুশে বইমেলায় প্রথম প্রকাশিত হয়। এরপর সনেট কাব্য “মহামানব-২০১০ সাল” ও সনেট মহাকাব্য “ভোট-২০১০ সাল” সহ বিভিন্ন ধর্মদর্শনের বই তাঁর নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকে। বিশেষ করে “সনাতন হিন্দু ধর্ম পরিচিতি এবং ঔঁম ও কল্কি অবতার প্রসঙ্গ-২০১৯ সাল”-এ কলকাতার ‘রেনেসাঁ পাবলিশার্স’ থেকে ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায়’ প্রকাশিত হলে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপকভাবে সাড়া পড়ে যায়। পরবর্তীতেও তাঁর “ভববাদী দর্শন (একটি মৌলিক দর্শন গ্রন্থ)-২০২২ সাল” ও “সমস্যা সমাধানে দর্শনের ভূমিকা-২০২২ সাল” নামক বই দু’টিও ভিন্ন রকম চিন্তা-ভাবনার ফসল বলে চিন্তাশীলদের নিকটে যথেষ্ট সমাদৃত হয়। বিশেষ করে দর্শনের মৌলিক ছয়টি শাখা তথা “ধর্ম (জীবনবিধান), আইন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ভাষা ও সাংস্কৃতিক এবং সমাজ ও আত্মদর্শন” বিষয়ক বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সুবৃহৎ পুস্তক ছয়টি তাঁর স্বতন্ত্র চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণার স্বাক্ষী বহন করে চলেছে।
এছাড়া তাঁর গবেষণাধর্মী প্রবন্ধগ্রন্থগুলোও ভিন্ন তথ্যে সমৃদ্ধ বলে অনেকের গবেষণার মূল উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর রচিত “বর্তমান বিশ্বে শয়তানের কীর্তিকলাপ-(চার খন্ড একত্রে, মানুষ ও মনুষ্যত্ব, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য,বাংলা সংস্কৃতি ও সভ্যতা,বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইহূদীদের আধিপত্য, বর্তমান বিশ্বে নারীদের অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, বিশ্ব রাজনীতিতে ইহূদীদের ভূমিকা এবং ভবিষ্যতের পৃথিবী, স্বাধীনতা কি ও কেনো এবং তা রক্ষা করার উপায়” বইগুলোও খুবই যুগোপযোগী চিন্তাধারার নির্যাস। তাঁর “অভাগার স্বর্গ (থ্রিলার উপন্যাসের প্রথম খন্ড)” যা ১৭৬০ সালের নীলচাষ থেকে আরম্ভ করে স্বাধীনতা পরবর্তী ২০০০ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলীর আলোকে রচিত ঐতিহাসিক উপন্যাসটিও ইতিহাসের বাঁক বদলের তথ্যে ভরা।
পুরস্কার ও সম্মাননাঃ
১) নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধূরাণী স্মৃতিপদক-২০২০ (কবিতায়) ২) কবি জীবনানন্দ দাশ স্মৃতিপদক-২০২১ (গবেষণায়) ৩) বিজয় কেতন সম্মাননা-২০২১ (শিশু সাহিত্যে) ৪) করোনা যোদ্ধা সম্মাননা-২০২১। ৫) স্বাধীনতা সম্মাননা-২০২২ (আধুনিক সনেট কবিতায়) ৬) বাংলা সাহিত্য উৎসব সম্মাননা-২০২২ (প্রহসন কাব্যে) ৭) অ্যাওয়ার্ড অব ফ্রিডম-২০২২ (ছোটগল্পে) ৮) মাদক বিরোধী অ্যাওয়ার্ড-২০২২। ৯) মহাত্মা গান্ধী গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড-২০২২, কলকাতা,ভারত ১০) প্রদীপ্ত সাহিত্যাসর সম্মাননা-২০২২ (রোমান্টিক কবিতায়) ১১) পন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর স্মৃতিপদক-২০২২ (দর্শনে) ১২) মাদার তেরেসা স্মৃতিপদক-২০২২ (স্বাস্থ্যখাতে সেবায়)।
নিচে কিছু তার কবিতা দেয়া হলো:
১। উল্লুঝুল্লুু
উল্লু-ঝুল্লু হয়ে রয়েছে গো মাথা,
মনোযোগ দিয়ে শোনে বসে গীতা।
দাড়ির দৈর্ঘ্য গেছে বুকখানি ছেড়ে,
হয়তো বা তার চেয়েও গেছে আরো বেড়ে।
গোঁফ এসে করেছে দাড়িতে দস্তি,
জটলা বেঁেধ তারা করে গো কুস্তি।
এ রকম নাহলে নেই যেন স্বস্তি,
ঢিলে ঢালা পাঞ্জাবী আরো দিই ফিরিস্তি।
লুঙ্গি বা পাজামায় জাতীয়তা ওরে!
শরীরটা শোকাতে গাঁজা তাই ধরে।
কঙ্কাল দেহখানি সৌন্দর্যের প্রতীক,
মহাসন্ন্যাসী এমন ভাব গতিক।
চাল চলনে দেখি পদে পদে পোচ,
লম্বা ঝুলাখানি জুড়ে থাকে কোচ।
কথাবার্তায় থাকে ভিন্ন ভাব,
হাসে একটুখানি ঠোঁটে দিয়ে চাপ্।
অথবা হো হো করে উঠে মাঝে মাঝে,
নিজেই মহাপন্ডিত বোঝাতে চায় কাজে।
প্রকৃত কবি নয়, তবু কবি সাজে,
দেখে আহারে মরি আমি লাজে !
দু’ একটা বই রাখে ঝুলার ভাজে ,
কপাল জড় করে দেখে মাঝে মাঝে।
চোখের চশমাখানি নেয় একটু এঁটে,
দেখে যাতে মনে হয় জ্ঞানী বটে।
আপন বই বিক্রিতে থাকে বেশী ঝোঁক,
নিজে ছাড়া অন্যের বিরুদ্ধে শত অভিযোগ ।
নিজে নিজেই সেজন সেজেছে কবি,
কাব্য আকাশে উঠল ভূয়া রবি।
২। মন
বুকরে মাঝে আছে অমূল্য মন,
ভালবাসার তরে সৃষ্টি সজেন।
তবুও ভালবাসা বোঝে না এ মন,
দোষে দশিহোরা সে সারাক্ষণ।
তবু স্বীয় দোষ করে সংবরণ,
সাধন জোরে গড় ভালবাসার মন।
বাঁধো হৃদয় মাঝে ভালবাসার ঘর,
সবাই অতি আপন নয় কউে পর।
সবাইকে দখেি মোরা এক সম্মান,
সবার মাঝে স্রষ্টা;থাকে সব প্রাণ।
সবার তরে মোরা বলিায় এ জীবন,
ইহাই তো ভালবাসা বোঝে কয়জন ?
৩। মাটি
মাটরি মানুষ তুম,িওহে মহাশয় !
বৃথা জনম কনে করতিছে ক্ষয় ?
তবো দহে মাঝে অমূল্য নধি,
পরম ভক্তি করে সৃজলিনে বধি।
যাতে জনম তুমি করো ধন্য,
সৃষ্টকিুলে হতে পারো অনন্য।
যাতে সবার চয়েে হতে পারো দামী,
তোমার প্রমেে মজে আছে অর্ন্তযামী।
তাই তো সবাই তোমায় করলিো সজেদা,
তবুও জীবন কনে কাটাও বহেুদা।
কনেো বশ্বিাস করো শয়তানরে কথা ?
এক্বীন মাঝে যে আনে শথিলিতা।
কনেো তারে তুমি লও আপন করে ?
লালন করো কনেো অন্তঃপুরে ?
কনেো দয়িে তারে শুধু আসকারা ?
মানব জনম তুমি ফলেতিছে হারা।
কনেো তারে তুমি বাসতিছেো ভালো ?
পাপে হৃদয় যার হয়ে আছে কালো।
৪। মোহ
জগত মায়া ভরা মমতার গাছ,
মানুষকে ধোঁকা দয়ো যনে তার কাজ।
তাই তো পাওয়ার তরে করে তোলে ব্যাকুল,
মানুষ মোহে মতেে করে যাতে ভুল।
যাতে একরে পরে একে থাকে মতে,
পাওয়ার তৃষ্ণা থাকে র্সবাঙ্গে গাঁথা
যাতে হৃদয় সদা অতৃপ্ত র’হ,
না পাওয়ার যাতনায় যায় সময় বয়।
চোখে থাকে সদা কুদৃষ্টরি চাওয়া,
জগতে যদওি না হয় পাওয়া।
হৃদয় চাহে সদা ববিধিরে পরশ,
ববিধি প্রমেে মজে হতে চায় সরস।
কারণ তৃষ্ণা থাকে এ হৃদয় জুড়,
মোহরে মমতা মাখা ফাগুনরে নীড়।
৫। শ্যামলী
বাদল নমেে ভূমি করে রসালো,
মাট-িউদ্ভদি সবাই জীবন পলেো।
সুগন্ধ-খুশবু এলো মশলার বন,
প্রমেকি হৃদয় কথা বলে তার কান।
কখনো রূপে তার হয়ে দশিহোরা,
পাহাড় হতে বয়ে যায় ঝরণাধারা।
দু’কুল উছলায় তার যৌবনরে ভার,
কুলকুল রবে সে যায় গান কর।
কখনো চোখে পড়ে মহেদেীর ফুল,
কানে পরে আছে লাল লাল দুল।
কখনো চোখে পড়ে গোলাপরে কুঁড়,
প্রমেরে টানে বুঝি আসবে সে ফাঁড়।
কখনো উপত্যকায় ফোটে লাল ললি,
আনমনা পথকি রুপে যায় পথ ভুল।
কখনো লতাগুলো মলেে তার চুল,
বুকে ফুটয়িে রাখে বসন্ত ফুল।
কখনো ফুলরে ঠোঁটে মখেে থাকে মধু,
প্রমেরে যাতনায় পাগল নববধূ।
কখনো নব বর বরণরে লাগ,
বাগে ফুলরাজী থাকে গো জাগ।
কখনো সথোয় জাফরান,দারুচনি;
সৌরভ সমীরপে সজ্জতি রানী।
কখনো সবুজ-শ্যামল-সুষমা প্রকৃত,
গলোব মুড়য়িে থাকে অপরুপ রীত।
৬। স্নেহ
যখন ছলি না মোদরে কোন চহ্নি,
মায়রে পটেে দলিনে করে গন্য।
তখন ছলিমে মোরা তৃতীয় আঁধার,
ভালবসেে আনলনে পৃথবিীর ‘পর।
তখনো ছলিমে মোরা বড় অসহায়,
বুকে তুলে নলিনে ভালবসেে মা’য়।
শত চুমু এঁকে দলিনে কচি এ মুখ,
কোমল হাতে চপেে ধরলনে বুক।
বারকে ফরিে ফরিে দখেে এ মুখ,
হৃদয় জুড়ে পতেনে পরম সুখ।
ক্ষণকি বরিহে তাঁর পুড়ে যতে মন,
অতি স্নহে-মায়ায় কাটতো গো ক্ষণ।
কখনো কাটতো ক্ষণ পতিার কোল,
আনন্দে দহে-মন উঠত দুল।
দোদুল্য মনখানি দোলনায় দুল,
কখনো যতে সুখে পৃথবিী ভুল।
কখনো প্রয়িজনরে মুখরে কথা শুন,
আপন মনে হসিবে ফলেতাম গুন।
কখনো হসেে দতিাম ফোঁকলা দাঁত,
কত-শত জ্বালা দতিাম দনি-রাতে ।
তবুও সবাই সব নীরবে মনে,
ভালবাসা দতিনে র্সবক্ষণ।
৭। শৈশব
হৃদয় মাঝে জানি কত কি টান,
প্রকৃতি কি মরেছেে বান ?
নাকি প্রমেে সে ফলেছেে মোর,
আদৌ নাহি মন টকেে গো ঘর।
ব্যাকুল হৃদয় বড়ই উতাল-পাতাল,
উতাল তরঙ্গে সাগর যমেন বতোল।
তাই তো ছুঁটে চলি যখন-তখন,
ঘরে কছিুতে থাকে না এ মন ।
ছুঁটে চলি কোন সাথীর সাথ,
শশিরি ভজো ঘাসে অতি প্রাত।
কখনো ছুঁটে চলি ফসলরে মাঠ,
অথবা ঝাঁপড় খলেী নদীর ঘাট।
কখনো ডাঙায় করি দৗেঁড়াদৌঁড়,
অথবা এটা-সটো ছুঁড়াছুঁড়।
কখনো ঘাসে ধরি ফড়ং পোকা,
ধরতে গয়িে কত খয়েছেি ধোঁকা।
কখনো গুরুজনরা বলতনে ‘ও খোকা’!
শষেে রৌদ্র-জ্বরে মরবি ধুকা।
ত্বরা কর;েজোরে ফরিে যা ঘর,
ছায়া পড়লে আসসি পর।
কন্তিু কার কথায় কি আস-েযায় ?
বরং ওদরে কথায় আছে সংশয়।
তাই তো আবার ছুঁটি খলেবার তর,
সকাল-দুপুর যায়;সন্ধ্যায় ঘর।