কবির মাহমুদ-এর শিশুতোষ ছড়ার সমাহার
১) আমার এই দেশ
পাখিদের কলরবে
ওঠে রোজ রবি
সবুজের বুকে হাসে
শেফালির ছবি।
কৃষকের মুখে হাসি
হলুদের মাঠে
খুকাখুকি বই হাতে
বসে রোজ পাঠে।
ফুল ফুটে ফুল বাগে
দোয়েলের গানে,
শত নদী বয়ে যায়
কল-কলতানে।
মাঠ ঘাট ছায়াঘেরা
সবুজের হাসি,
আমার এই দেশটারে
কতো ভালোবাসি।
২) খাঁচার পাখি
বন্দী কেন? খাঁচার ভেতর পাখি
কেন ওদের বন্দী করে রাখি?
চায় না ওরা আদর ভালোবাসা
চায় না এমন সুখের স্বর্গে হাসা।
যতই আদর করো না তার সনে
মন টিকে না, চায় যেতে তার বনে।
তার ঠোঁটে আজ নেই বুলি কি সাধে?
খাঁচা থেকে মুক্তি পেতে কাঁদে।
কতোই ছিল সুখের মাখামাখি
বন্দী খাঁচায় দুঃখ ভরা আঁখি।
হারিয়ে ওদের কাঁদছে ছেলে মেয়ে,
চোখের জলে উঠছে নেয়ে নেয়ে।
মুক্ত করে দাও না খাঁচা খুলে?
দেখবে কতো আনন্দে যায় দুলে!
দাও ছেড়ে তাই মুক্ত আকাশ পানে
উড়ুক ওরা সুখের গানে গানে।
৩) একটি প্রভাত আমার ছিল
একটি প্রভাত আমার ছিল
কিরণ মাখা,
সেই প্রভাতে আমার মায়ের
স্বপ্ন আঁকা।
একটি প্রভাত আমার ছিল
ঊষার রাঙা,
সেই ঊষারে কিচিরমিচির
স্বপ্নডাঙা।
একটি প্রভাত আমার ছিল
নীলেরকুঁড়ি
নীল কুঁড়িতে দিতাম রোজ’ই
হামাগুড়ি।
একটি প্রভাত রঙিন ছিল
পুষ্পঘ্রাণে,
মুয়াজ্জিনের মধুর সুরে
হাসতো প্রাণে।
একটি প্রভাত আমার ছিল
কোরআন সুরের,
সেই প্রভাতে আলোর মিছিল
হৃদয় নূরের।
একটি প্রভাত আমার ছিল
সুখের আঁখি,
ঘুম ভাঙাতে ডাকতো রোজই
ভোরের পাখি।
৪) আমি যদি আকাশ হতাম
আমি যদি আকাশ হতাম
উঠতো বুকে চাঁদ,
বিলিয়ে দিতাম জোছনা ধরায়
ভাঙতো আঁধার বাধ।
চাঁদকে নিয়ে ঝিলিমিলি
খেলতো তারা রাতে,
মিটমিটিয়ে উঠতো মেতে
ওই জোনাকির সাথে।
আমার বুকে সূর্য হেসে
জাগতো রাঙা প্রাত,
আলোর মিছিল ছড়িয়ে দিয়ে
রাত পোহাতাম রাত।
আমার বুকের বৃষ্টি ধারায়
বৃক্ষলতার স্নান,
উঠতো হেসে গেয়ে গেয়ে
ভোর পাখিদের গান।
আমার নীলে রাঙিয়ে দিতাম
ঊষার প্রভাত দোর,
ওই মিনারের মধুর সুরে
আসতো প্রভাত ভোর।
৫) চাঁদ মামা
সোনামণি ঘুম থেকে
ওঠে বলে অই,
মাগো আজ আকাশের
চাঁদ মামা কই?
ডাকে খোকা চাঁদ মামা
আয় কাছে আয় না,
পড়ার টেবিলে খোকা
ধরে এই বায়না।
চাঁদ মামা উঁকি দিলে
জানালার পাশে,
তার সাথে খোকাখুকি
প্রাণ খুলে হাসে।
কবি পরিচিতি:
কবির মাহমুদ,
সহকারী শিক্ষক, আল-হেরা একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ, শিবের বাজার, সিলেট।
পিতাঃ মোঃ সমুজ আলী
মাতাঃ কামরুন নেসা
গ্রামঃ নারাইনপুর,
পোঃ পাড়ুয়া বাজার,
থানাঃ কোম্পানীগঞ্জ,
জেলাঃ সিলেট,
বাংলাদেশ।