কবিতা চর্চায় এসেছে জাগরণ
— মাইন উদ্দিন আহমেদ (USA)
মনে হয় বাংলাদেশে কবিতা চর্চা খুব জমে উঠেছে। গদ্যের ক্ষেত্রে খুব একটা আশার আলো নজরে আসছে না। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের বদৌলতে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজিত কবিতা লেখার প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ ইত্যাদি ঘিরে এক অন্যরকম জাগরণ দৃশ্যমান হয়েছে। কাব্য বিষয়ক সংগঠন গড়ে ওঠা নিঃসন্দেহে একটি ভালো লক্ষণ। মিছেমিছি সময় নষ্ট না করে বা কোন রকম না সূচক বিষয়ে না জড়িয়ে, পড়ালেখার ফাঁকেফাঁকে কাব্যচর্চা অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে।
ফেইসবুক এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি, অনেক সংগঠন নিয়মিত কাব্যচর্চা উৎসাহিত করার জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। বিজয়ীদের পুরস্কার ও সার্টিফিকেট হাতে সন্তুষ্ট চিত্তে হাসিমুখে তোলা ছবি বেশ ভালো লাগে। উৎসাহী উদ্যোক্তাগণ এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার। এসব প্রচেষ্টা অবশ্যই ইতিহাস হয়ে থাকবে। কোন উদ্যোগই ক্ষুদ্র নয়। ছোট্ট একটি বীজ থেকেই এক বিশাল মহীরুহ জন্ম নেয়।
সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে আমার কাছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ওঠা এই সংগঠনগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে, কর্মকান্ডে গদ্য অর্থাৎ গল্প, প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রভৃতিও অন্তর্ভূক্ত করার অনুরোধ জানাবো।
সবচেয়ে বেশী জরুরী ভিত্তিতে আরেকটি কাজ করতে অনুরোধ করবো, তা হচ্ছে, সত্যিকার অর্থে বিজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে নিয়ে বিচারক কমিটি গঠন করা। প্রভাব নয়, বিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়ে দুতিন জনের হলেও একটি কমিটি করবেন। দেখা গেলো, প্রতিযোগিতায় যে সব কবিতা পাওয়া গেলো, কোনটাই ত্রুটিমুক্ত নয়, তখন তুলনামূলক কম ত্রুটির কবিতাকে বেছে নিতে হবে এবং ত্রুটিমুক্ত করে তারপর পুরস্কার ঘোষণা করতে হবে।
একথাটি পড়ে কেউ মন খারাপ না করতে অনুরোধ করবো। বাস্তব অবস্হা লক্ষ্য করেই এই পরামর্শটি দেয়া হলো। কবিকে নির্ভুল হয়ে উৎকর্ষ সাধনের সুযোগতো দিতে হবে। ভুল সহ একটি কবিতার কবিকে পুরস্কার দিলে ওটা পড়ে মানুষ হাসবে। তাতে কবি, কবিতা, সংগঠক, আয়োজক সবারইতো ক্ষতি।
সহজভাবে একটা কথা বলা হয়ে থাকে, কবি যা লেখেন তা হচ্ছে কবিতা আর যিনি কবিতা লেখেন তিনি হচ্ছেন কবি। কতো সহজ বর্ণনা। আসলে কি এতোই সহজ?
যা-ই হোক, কাব্যচর্চার ইদানিংকার জাগরণ নিঃসন্দেহে একটা ভালো ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করে। সুতরাং কবি বন্ধুরা, থামবেন না, এগিয়ে যান। অবশ্য পড়াশোনা ঠিক রেখেই কাব্যচর্চা করতে হবে। লেখক-লেখিকাদের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
লেখক : কবি ও কলামিস্ট (আমেরিকা প্রবাসী)