অবশেষে ‘চিত্রনায়িকা’ তকমা যোগ হচ্ছে অভিনেতা সুব্রত ও প্রয়াত অভিনেত্রী দোয়েল জুটির একমাত্র কন্যা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি! যিনি দীঘি নামে সব শ্রেণির দর্শকদের কাছে পরিচিত।
শিশুশিল্পী হিসেবে ‘কাবুলিওয়ালা’ সিনেমায় ২০০৬ সালে প্রথম অভিনয় করেন দীঘি। সেবারই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তার হাতে ওঠে শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর পুরস্কার। এরপর চাচ্চু আমার চাচ্চু, এক টাকার বউ সিনেমা দুটিতেও দীঘি অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর পুরস্কার। ছোট্ট দীঘি তখনই ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সেই ছোট্ট দীঘিরই ‘চিত্রনায়িকা’ হিসেবে আজ অভিষেক হলো।
টুঙ্গিপাড়ার মিয়াঁভাই’ নায়িকা দীঘির প্রথম সিনেমা। সিনেমাটি মুক্তির অপেক্ষায়। তার আগেই দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর পরিচালনায় ‘তুমি আছো তুমি নেই’ নামে আরেক সিনেমা দিয়ে দীঘির অভিষেক হলো। দেশের ২৫ টি সিনেমা হলে শুক্রবার (১২ মার্চ) এটি মুক্তি পেয়েছে।
নানা কারণেই ছোট্ট দীঘির প্রথম সিনেমা মুক্তি নিয়ে আলোচনায় মুখরিত চলচ্চিত্রপাড়া। কিছুটা সমালোচনাও সইতে হয়েছে দীঘিকে। প্রত্যাশিত ট্রেলারটি দর্শকদের ভালো লাগেনি! দীঘি নিজেও সিনেমাটির ট্রেলার দেখে হতাশ হয়েছেন। তবে তিনি পুরোটাই ছেড়ে দিয়েছেন পরিচালকের উপর।
দর্শকরাও তাই মনে করেন! কারণ, পরিচালক যেভাবে দীঘিকে উপস্থাপন করেছেন তিনি সেভাবেই ক্যামেরার সামনে ধরা দিয়েছেন। দীঘি মনে করেন, ফিল্ম অলয়েজ ডিরেক্টরস মিডিয়া। তিনি বলেন, ট্রেলারে পুরো সিনেমা তো দেখা যায় না। তবে আমার বিশ্বাস পুরো সিনেমাটি দেখলে যারা ট্রেলারে হতাশা হয়েছেন তাদের কাছে ভালো লাগতে পারে। সেই প্রত্যাশা করছি। আমি নিজেও আমার প্রথম সিনেমা সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকদের সঙ্গে বসে দেখবো। দুই একদিনের মধ্যেই সিনেমা হলে যাব।
শুক্রবার বিকেলে চ্যানেল আই অনলাইনকে দীঘি বলেন, ইশ! মা যদি আজ বেঁচে থাকতেন, কতই না খুশী হতেন। মাকে মিস করছি। বারবার ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছি। নায়িকা হওয়ার অনুভূতি প্রকাশের মতো নয়। সেই ছোট্ট দীঘির সিনেমা আগে সিনেমা হলে চলতো। আজ থেকে নায়িকা হিসেবে দর্শক দীঘিকে দেখতে পাচ্ছেন। সিনেমা কিংবা ট্রেলার কেমন বা এসব নিয়ে কত বিতর্ক হয়েছে এসব বাদ দিয়ে আমার প্রথম সিনেমা রিলিজ হলো এটা ভাবলেই ইমোশনাল হয়ে যাই। তবে সত্যি, মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে।
শুটিংয়ে আছে দীঘির ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সিনেমা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘বঙ্গবন্ধু’। যেখানে তিনি অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন। বলিউডের শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় দীঘি অভিনয় করছেন বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা রেনুর চরিত্রে। মুম্বাই থেকে প্রথম লটের শুটিংও শেষ করেছেন তিনি। মার্চের শেষে যোগ দেবেন বাকি অংশের শুটিংয়ে। এই সিনেমার মাধ্যমে দীঘি মনে করেন তিনি ইতিহাসের অংশ হতে পেরেছেন।
দীঘি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের জন্য বাঘা বাঘা শিল্পীরাও অডিশন দিয়েছেন। কিন্তু সুযোগ পেয়েছেন কয়েকজন। আমি যখন অডিশন দেই তখনও সিনেমায় কামব্যাক করিনি। আমার যোগ্যতা বিচার করেই কর্তৃপক্ষ নির্বাচন করেছেন। এটা অনেক বড় প্রাপ্তি মনে করি। এ সিনেমা দিয়ে তারকা হতে পারবো না, তবে ইতিহাসের পাতায় আমার নাম থাকবে। জানিনা আমি অভিনয় দিয়ে কতটুকু সমৃদ্ধি করতে পারবো, তবে আমার নামটা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। তাই আমার আর কোনো আক্ষেপ থাকবে না।