আমার শৈশব স্মৃতি
দিল আফরোজ রিমা
১ম পর্ব
শৈশব স্মৃতির কথা বলতে গেলে প্রথমেই মনে পড়ে আমার সবুজ গ্রাম, দাদা-দাদি, চাচা-ফুপু, মা – বাবা, ভাই-বোনের কলকাকলীতে মূখর আমাদের গ্রামের বাড়ি। আমাদের বাড়ি আমার স্মৃতির পাতায় আমার হৃদয় দড়জায় এক ভালবাসার স্বর্ণ মন্দির। ফুল ও ফলের গাছে ছায়াঘেরা ছিল সুবিশাল বাড়িটা।
দক্ষিণ মুখো বাড়িটার সামনেই ছিল অবারিত সবুজ শষ্যের মাঠ। বাড়িতে বেশ কিছু ঘর ছিল। আমার দাদা-দাদীর ঘরটি ছিল সবচেয়ে বড় আর সুন্দর। শানবাঁধানো লাল রঙের বারান্দার নিচে ছিল বড়ো বড়ো সিঁড়ি। সিঁড়ির দু’পাশে বসার জায়গা। সকাল বিকাল ওখানটাতেই জটলা হতো, গল্প হতো। সেই বারান্দাটা আমার মনে এক বিশাল জায়গা জুড়ে আছে।
আমার স্মৃতির পাতায় জেগে থাকা কোন মানুষের কথা বলতে হলে প্রথমেই একজন মানুষের কথা বলতে হয়। তিনি হলেন, আমার দাদা ভাই। আমার দাদাভাই ছিলেন সুশিক্ষিত পরিমার্জিত এক ব্যক্তিত্ব। দশ গ্রামের একজন ছিলেন তিনি। একই সাথে তিনি ম্যারিজ রেজিস্ট্রার এবং মাধ্যমিক স্কুলের সন্মানিত শিক্ষক ছিলেন। বাংলা ছাড়াও ইংরেজি, আরবি, উর্দু এবং ফারসি ভাষায় কথা বলতে পারতেন। আমি নিজেই শুনেছি তার মুখে বিভিন্ন ভাষায় দু একটি বাক্য। তিনি আমার সাথেই বেশি গল্প করেছেন। বলেছেন, তার ছাত্র জীবনের কথা, বিয়ের পর আমার দাদির সাথে নতুন ঘর বাঁধার কথা। জীবনের নানা সুখ ও দুঃখের কথা বলতে গিয়ে কখনো দু একটি গানের কলি গেয়েছেন। কখনো কোরাআনের আয়াত, কখনো দুটো হাদিস, কখনো সেক্সপিয়ারের লেখা দুটো লাইন তার মুখে শুনেছি।
আমার দাদাভাই ছিলেন শিক্ষানুরাগী এক ধার্মিক মানুষ। সাদা পায়জামা পাঞ্জাবি পড়তেন তিনি। সবসময় ধবধবে পরিপাটি পোশাকে থাকতে পছন্দ করতেন।
আমার দাদাভাই মাঝে মাঝে আমার স্কুলে যেতেন। আমার শিক্ষকগণ তাকে স্যার বলতেন। অনেক সন্মান করতেন। আজ আমার দাদাভাই বেঁচে নেই। স্মৃতি হয়ে গেছেন। মনে পড়ে দাদাভাই নিজে সাথে নিয়ে আমাকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। হোস্টেলে সিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। কলেজের অনেক স্যার আমার দাদাভাইকে স্যার বলতেন। এই ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ মজার ছিল।
আমার মা বাবার কথা বলার আগেই দাদাভাই এর কথা বলা হয়ে গেল। আমার স্মৃতির জানালা ধরে আজও অম্লান তিনি।
আমার স্মৃতির মধ্যমনি আমার আব্বা। আমার আব্বা আমার শ্রদ্ধা ভালবাসা আর আদরের একটি টুকরো। তার কথা লিখার শুরুতেই আমার দু চোখ ভিজে উঠেছে। আমি সবসময় বলতাম আম্মার চেয়ে আব্বা আমাকে বেশি ভালবাসে। আর আমার আম্মা বলতেন, আমি নাকি আম্মার চেয়ে আব্বাকে বেশি ভালবাসি।
আমাদের বাড়িতে ছিল অনেক ফল ও ফুলের গাছ। কিছু কিছু গাছ ছিল অনেক পুরোনো আর প্রকান্ড। আমরা ভাইবোনেরা গাছে উঠে আম, জাম, ফুল এসব পারতাম। বাড়িতে প্রচুর আমগাছ ছিল। ঝড়ের দিনে আম পড়ে সারাবাড়ি বিছিয়ে যেত। বাড়ির সবাই আম কুড়াত। আব্বা বাড়িতে থাকলে আমার আম কুড়ানো হতো না। বৃষ্টি ঝড় বাদলে আব্বা আমাকে কখনো বাইরে বের হতে দিতেন না।
ঝড়ে পড়া আমগুলো আমার আম্মা আমার দাদাবুজি কাটতে বসতেন। তখন কাঁচা আম কাটা, শুকানো আর আচার বানানোর ধুম লেগে যেত সারাবাড়িতে। আর আচারের মসলার সুগন্ধে চারিদিক ভরে যেত। তারপর আম পাকার পালা। আমাদের বাড়ির প্রত্যেকের ঘরেই তখন প্রচুর পাকা আম থাকতো। সকাল বিকেল দু বেলা তখন গাছে উঠে আম পাড়ার ধুম। আমিও সে সময় গাছে উঠে আম পেড়েছি। পাকা পাকা আম পেরে খুজ মজা পেতাম।
শীতের কুয়াশাভেজা সকালের কথা মনে পড়ে। আমরা ছিলাম গ্রামের ছেলে মেয়ে। খুব সকালেই ঘুম থেকে উঠতাম। ফজরের সময় দূর মসজিদ থেকে ভেসে আসতো আজানের ধ্বনি। আমার আব্বা আম্মা উঠে নামাজ পড়তেন। আমাদেরও ডাকতেন। উঠতে চাইতাম না। চুপ মেরে শুয়ে থাকতাম আরো কিছুক্ষণ। আম্মা আবার ডাকতেন। নিরুপায় হয়ে উঠে বাইরে যেতাম। কুয়াশায় ঢাকা পরিবেশ। হালকা অন্ধকার। গেটের বাইরে ছিল টিউবওয়েল। ওখানে অজু করতে গিয়ে আমি অন্যমনষ্ক হয়ে যেতাম। প্রকৃতির এক অপূর্ব নিরবতা আর সূভ্রতায় আমি মুগ্ধ হতাম। দূরের গ্রাম দেখা যেত না। কিন্তু আবছায়ার মধ্যে মনে হতো কি যেন নড়াচড়া করে। আর কেমন যেন শব্দও হয়। আমি বেশ কয়েকদিন খেয়াল করে একদিন আবিষ্কার করলাম – নড়াচড়া করা বস্তুগুলো আসলে মানুষ আর হালের গরু। খুব ভোরে কৃষক চাচারা মাঠে গরু নিয়ে হাল চাষ করত। সেদিনের সেই শীতের ভোরের সূভ্রতা অমলিন হয়ে আছে আমার হৃদয় পটে। তারপর ধীরে ধীরে লাল সূর্যের মিষ্ট রোদে সারা উঠোন ভরে যাওয়া। সেকি মজার ব্যপার, বলে বুঝানো সম্ভব নয়। শীতের দিনে সম্ভবত মাঠে গমের বীজ ছড়ানো হতো। আমাদের পাড়ার ছোট ছেলেমেয়েরা ক্ষেতের পাশে বসে ছোট্ট ঝুড়িতে করে মুড়ি খেতো আর বাঁশের লম্বা কঞ্চি হাতে কাক, বাবুই, শালিক তাড়াত। আর মুখে বলত – হ্যারো–দুরো।’ শব্দগুলো শুনতে আমার বেশ লাগতো। আমরাও আমাদের বাড়ির উঠোনে শীতের রোদে মাদূর পেতে ভাইবোন নিয়ে পড়তে বসতাম। সাথে পেয়ালায় নিতাম মুড়ি আর সন্দেশ।
শীতের দিনে আমাদের বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানানো হতো। সেই সময় কমবেশি সব বাড়িতেই পিঠার আয়োজন হত।
শীতের মৌসুমে আমাদের বাড়ির রাখাল গনিকাকা বাড়ির আঙিনায় সব্জীর চাষ করত। নতুন সব্জীর চারা আমার মনে নতুন আনন্দের দোলা দিয়ে যেত।
গ্রীষ্ম কালে প্রচন্ড রোদ আর গরমে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠত। স্কুলে যেতে তখন আমাদের খুব কষ্ট হতো। আমার আব্বা বলতেন এত গরমের মধ্যে স্কুলে যাওয়ার দরকার নেই। আমরা তার চোখ এড়িয়ে স্কুলে যেতাম। শষ্য ক্ষেতের পাশ দিয়ে যেতাম স্কুলে। এক সময় ধান ক্ষেতে পানি সেচের জন্য ডিপ মেশিন বসানো হল। স্কুল ছুটি হলে বাড়ি ফেরার সময় সেই মেশিনের কাছে দাঁড়িয়ে পানি পড়া দেখতাম।
দুপুর বেলায় রোদে পুড়ে কৃষক চাচারা আমাদের বাহির বাড়ির গাছের ছায়ায় বিশ্রাম করত। আমার দাদাভাই তাদের জন্য শরবত বানিয়ে দিতে বলতেন। আমরা বিরক্ত হতাম কিন্তু শরবত বানাতেই হত।
মনে পড়ে, গরমের সময় স্কুল থেকে ফিরলে এবং কখনো খেলাধুলা করে ঘরে ফিরলে আম্মা নিজের হাতে পাতা দধি দিয়ে মাঠা তৈরি করে খাওয়াতেন।
আমার আম্মা আমাদের খুব যাত্ন করতেন। আর শাসনও করতেন। তিনিই আমাদের আসল শিক্ষক। তার কাছেই লেখপড়ার হাতেখড়ি। নামাজ শিক্ষা। কোরআন শিক্ষা। নৈতিক চলন শিক্ষা। তবে আমার আব্বা কিচ্ছু শিখাননি। শাসনও করেননি। কোনদিন বকা দেননি। কখনো রাগ করেননি। শুধু ভালবেসেছেন। আগলে রাখতে চেয়েছেন সবসময়। তার কাছেই ছিল আমার সকল আবদার।
ছোটবেলায় প্রকৃতির ছয়টি ঋতুই উপভোগ করতাম। বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই ঋতু বৈচিত্র্য যেন এক এক করে ম্লান হয়ে গেল। এখন প্রকৃতি অন্যরকম। ফিরে পেতে ইচ্ছে করে সেদিনের সেই বসন্তকাল। শীতের শেষে যখন গা একটু একটু ঘেমে উঠত আর দক্ষিণা বাতাসের শীতল পরসে কিযে আরাম আর ভাললাগা অনুভব করতাম তা শুধু অনুভবই করা যায় প্রকাশ করা যায় না। সে সময় সজীবতায় ভরে যেত চারিদিক। সবুজ ধানক্ষেতের উপর দিয়ে বাতাস বয়ে যেত আর সেদিকে তাকালে মনে হত সবুজ কোমল ঢেউয়ের মাতন লেগেছে। কি অপূর্ব সাজে সেজে উঠত চারিদিক। আমাদের বাড়িতে গাছেরতো অভাব ছিল না। তাই নানা রকমের পাখীরও অভাব ছিল না। নানারকম পাখির ডাকে মুখরিত ছিল আমাদের সেই স্মৃতিঘেরা বাড়িটা। বাড়িতে নির্দিষ্ট ফুলের বাগান ছাড়াও এখানে সেখানে বড় বড় ফুলের গাছ ছিল। ছিল কাঠমালতি, বকূল, গন্ধরাজ, হাজারি গোলাপ, হাসনাহেনা, বেলি, কামিনী, সন্ধামালতি, সন্ধামনি, কুঞ্জলতা, রঙন, রক্তজবা ইত্যাদি। ছিল রং-বেরঙের পাতাবাহারের গাছ। আমার আম্মা ফুল গাছের যত্ন করতেন। আম্মা প্রতিদিন ফুলদানিতে কাচাফুল সাজিয়ে ঘরে রাখতেন। ছোট বেলা আমার আম্মা আমাকে বিভিন্ন ঢংয়ে চুল বেঁধে তাতে কাচা ফুল লাগিয়ে দিতেন।
আমার আব্বা ছিলেন একজন সুদর্শন ও কর্মঠ মানুষ। কোন কোন সময় দশ জনের দায়িত্ব তিনি একাই পালন করেছেন। আমার দাদা-দাদী, চাচা- ফুফু, আমাদের এককথায় বাড়ির সকলের দায়িত্ব আমার আব্বা এক হাতে পালন করে গেছেন। সে সব আমি নিজের চোখেই দেখেছি। তিনি তার ভাইবোনদের খুব ভালবাসতেন। আমি খুব কাছে থেকে তার আবেগ ভরা মনের খবর রেখেছি।
প্রতি বছর কোরবানির সময় আব্বা প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। অনেকেই সে কাজে হাত লাগিয়েছে। কিছুক্ষণ কাজ করে উঠে গেছে। আব্বা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কাজ করতেন।
আমাদের বাড়িতে কোরবানির জন্য বড় গরু কেনা হতো।কখনো সাথে কয়েকটি ভেরাও থাকতো। খুব মজা হতো তখন। আব্বা ই কোরবানির গরুগুলো নিজ হাতে জবাই করতেন। আব্বা যখন মাংস নিয়ে কাজে ব্যস্ত হতেন তখন আমি শরবত বানিয়ে খাইয়ে দিতাম। মাংস বিলানোর সময় অনেক লোকের ভিড় হত। আসলে আমাদের বাড়িটা ছিল অন্যরকম। সাটুরিয়া উপজেলার মধ্যে একটি বিশেষ বাড়ি। ঐতিহ্যবাহী সেই বাড়ির খ্যাতি ছিল। আর এখনো আছে। তবে আগের মত আনন্দঘন জৌলুশ এখন আর নেই। এখন তেমন কেউ বাড়িতে থাকে না। থাকেন আমার আম্মা আর আমার দুই কাকা। যার যার আলাদা বাড়ি।
ছোট বেলায় ছিল জনমানুষে গমগমে আনন্দঘেরা হাসি উচ্ছলতায় ভরা পরিবেশ। এখন নির্জন, শান্ত। সে বাড়িতে আমার আব্বা নেই। সবাই একসাথে বাড়িতে যায় কোন কোন সময়। গেটের কাছে দশ বারোটা প্রাইভেট কাড় ভিড় করে কিন্তু সেদিনের সেই প্রীতিঘন পরিবেশ আর উপস্থিত হয়না।
আমার আব্বাই আমার শৈশবের প্রধান স্মৃতি ঘেরা মানুষ। আজ তিনি নেই। আমি কখনো বিশ্বাসই করতাম না যে আব্বা পৃথিবীতে একদিন থাকবে না। খুব মনে পড়ে তার কথা। আমার আব্বা আমাদের বাড়ির জন্য অনেক খেটেছেন। নিজের অফিসের দায়িত্ব পালন করেও এত বড় একটি বাড়ির দায়িত্ব, এতগুলো মানুষের দায়িত্ব, বাড়িটা ঠিক রাখার দায়িত্ব এক হাতে পালন করে গেছেন নিরবে। তার ভাই বোনদের বিয়ে সাদির সময়ে দশ জনের কাজের দায়িত্ব একাই সামলে নিয়েছেন। আমাকে তার সমস্ত স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে নিজেই চলে গেছেন।
বর্ষাকালে যখন বাড়ির সামনে একটু একটু পানি আসতো আমরা তখন আনন্দে মেতে উঠতাম। প্রতিদিন সকালে উঠে দেখতাম পানি কতটা বেড়েছে। পানি বেশি হলে আমার আব্বা কাঠের বড় চওড়া টুকরো দিয়ে ঘাট বেঁধে দিতেন। কি মজাই না হতো। আমার আব্বা দারুণ সাঁতার কাটতে পারতেন। অফিসে যাওয়ার আগে বর্ষার সে পানিতে আব্বা সাঁতার কাটতেন। আমরা দেখে খুব মজা পেতাম। বর্ষার পানিতে আমরা ভাইবোনেরা খুব মজা করে গোসল করতাম। পানির মধ্যে খেলতাম কিন্ত বেশিক্ষণ পানিতে থাকার উপায় ছিল না। আম্মার বকুনির ভয়ে তারাতাড়িই উঠতে হত। বর্ষার সময় রাস্তাঘাটে পানি জমে থাকতো। তখন আব্বা স্কুলে যেতে দিতে চাইতেন না।
রাতে পড়তে বসলে চোখে ঘুম এসে যেতো। তখন আব্বা বলতেন- যাও শুয়ে পড়। আজ আর পড়ার দরকার নেই। কাল পড়ো।
আম্মা বলতেন- না, এখনো পড়া শেষ হয়নি। যাও মুখ ধুয়ে এসো। মুখ ধুয়ে পড়তে বসতাম আবার ঘুম আসতো। তখন আম্মা আবার বলতেন-সাবান দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নাও। পড়া শেষ না হলে শোয়া যাবেনা।
শরৎ কালের প্রকৃতি আর নীল আকাশ আমার স্মৃতি পটে আঁকা হয়ে আছে। এই ধুলোবালির শহরে আজ আর শরৎ ওভাবে দেখা দেয় না। শরতের নীল আকাশের ধবধবে মেঘগুলো তুলার মত ভাসতো। আমরা ভাইবোনেরা মিলে দেখতাম সেই সাদা মেঘের কারুকাজ।
সেই ভালবাসার বাড়িটাতে একটি শিউলি ফুলগাছও ছিল।
আমিরা সকালে যে সবার আগে উঠতে পারতাম সে সেদিন শিউলি ফুল কুড়াতাম। আমার আব্বা আমাকে খুব সুন্দর গোলাপি রঙের একটি ঝুড়ি কিনে দিয়েছিলেন। তখন সচরাচর ওরকম প্লাস্টিকের ঝুড়ি দেখা যেত না। সেই ঝুড়ি নিয়ে শিউলি আর বকূল ফুল কুড়াতে যেতাম। ঝুড়ি ভরে ফুল নিয়ে বারান্দায় বসে মালা গাঁথতাম।
কত কথা মনে পড়ে
তারই সাথে ব্যাথা ঝরে অন্তরে।
মনে পড়ে শুধু সেদিনের সুখ
দুখটাকে গেছি ভুলে।
ফিরে পেতে চাই সে হারানো দিন
জল ভরে আঁখি কূলে।
জানিনা আমার মত সব মানুষের মনে এমন ব্যাকুলতা আছে কিনা।.ফেলে আসা শৈশব, মায়ের অনুরাগ ভরা যত্ন, বকুনি, বাবার সাথে আহলাদিপণা সে যেন মধুতে মাখা।
সেদিনের হেমন্তকাল আজ যেন হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন। মাঠ ভরা পাকা ধান। আমাদের পাড়ার কৃষক কাকারা আর কৃষাণী কাকিরা সেই সময়ে খুব ব্যস্ত থাকতো। এত ব্যস্ততার মধ্যেও তাদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক লেগে থাকতো। হেমন্তের সোনালি ফসল, আর ফসল ঘরে তোলার আনন্দঘন ব্যস্ততা সত্যিই সুন্দর, মনমুগ্ধকর।
১ Comment
Congratulations