অস্তিত্বের কথকতা
সোমা তাহেরা চৌধুরী
এককালে তাঁরাও একদা ছিলো এইখানে
বিচরণ করতো এই নীলাভ পৃথিবীতে,
নিঃশ্বাস নিতো এই বায়ুমন্ডলে।
তাঁরাও জন্ম নিতো মাতৃজঠরে,
তাঁদেরও ছিলো বংশানুক্রম, পিতৃপুরুষ।
তারাও অপেক্ষা করতো প্রিয়জনের জন্য, প্রিয়ক্ষণের জন্য।
প্রিয় মানুষটির মুখে হাসি ফোটাতে তাঁরাও সাথে নিতো
কাঁচের চুড়ি, আলতা, নূপুর, কানের দুল, নাকছাবি।
বার বার গন্ধ শুঁকতো সাদা রুমালটির -যার এক কোণে
সূচিকর্মে লেখা, ‘ভুলো না আমায়।’
প্রিয়জনের সুখে আর আনন্দে তাঁরাও পুলকিত হতো।
প্রিয়ক্ষণে প্রিয়জনকে কাছে পেলে তাঁদেরও পাওয়া হয়ে যেত
গোটা পৃথিবীর তাবদ রত্নভান্ডার।
খুব কষ্ট পেলে জমাট বাঁধা কান্না
তাঁদেরও বুকে বিঁধতো শেলের মতোই।
হাল্কা হতে হয়তো বা তাঁরাও
দৃষ্টি প্রসারিত করতো অসীমাকাশে।
শ্রাবণ মেঘ ভারী হয়ে বৃষ্টি ঝরাতো কভু দুইচোখে।
তাঁরাও প্রতারিত হতো আপন ভেবেছিলো যাদের
তাদের কাছে থেকেই ভীষণ ভাবে,
বুকটা তখন দুমড়ে মুচড়ে যেত হয়তো।
ব্যর্থ কিংবা সফল হলে তাঁদেরই কেউ কেউ
বাকবিতন্ডায় মত্ত হতো,
মানসিক আঘাতে ঘায়েল করার চেষ্টা করতো।
তাঁরাই ছিল ধনী-নির্ধন, সফল-অসফল,
প্রেমিক-অপ্রেমিক, বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী,
বিখ্যাত-কুখ্যাত, দানশীল-কন্জুস;
মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান-জৈন-ইহুদী,
তাঁরাই ছিল ইনকা, আজটেক, কাওদাই,
সামারিতান, হোয়াহাও, জেন, বাহাই,
কনফুসীয়, ইয়াজিদি, জরথ্রুস্ট, মান্দাই,
শিন্তো, শাক্ত, দ্রুজ, রাস্তাফারি।
জন্ম-মৃত্যুর একটি মাত্র সুযোগে কতশত
মত-পথ-আবেগানুভূতি-বিশ্বাস,
কারণে অকারণে রক্তপাত-খুন-গুম!
তাঁদের বিচরণক্ষেত্রে আজ আমরা,
এই আমরাও অতীত হয়ে যাবো
পরবর্তী প্রজন্মের কাছে একদিন।
কে কবে চিরন্জীব রয়েছে এই পৃথিবীর বুকে?
সোমা তাহেরা চৌধুরী
২১.০৮.২০২২
১১ Comments
congratulations
Thank you so much
প্রিয় কবি, ব্যক্ত কথার মাঝেই রয়েছে অব্যক্ত কিছু কথা। অনেক ভাল লাগল, শুভাশীষ রইল।
চমৎকার লেখা
বিবেককে জাগ্রত করার মতো অনেক মূল্যায়ন ও সুন্দর কথা॥
অসাধারন বিবেক জাগ্রতকরণ কবিতা। লেখকের জন্য শুভকামনা রইলো।
Blessings and felicitations, Tahera.
May you touch hearts through your beautiful poetry!
মামুন ভাই, আপনার কথায় দারুনভাবে অনুপ্রাণিত হলাম। সাথে থাকবেন ?
বন্ধুবরেষু লিটু, প্রাণিত হলাম, সাথে চাই সবসময়ে ?
Thank you so much dear Tahmina ?
Thank you so much Honourable Ashraf Sir, please keep me in your prayers.