অন্ধকারে উৎস হতে।
সুলগ্না মিত্র।
আজকাল অনেককেই বলতে শুনি “be positive”, হতাশ হওয়া মানে negative চিন্তা করা। কান্নাকাটি করা বা ইমোশনাল হয়ে পরা খুবই খারাপ লক্ষণ। কিন্তু আমি অবাক হয়ে যাই, কারণ আমার মনে হয় ইমোশনই মানুষকে মানুষ বানায়। যে মানুষের ইমোশন নেই তাদের সাথে যন্ত্রমানবের খুব একটা পার্থক্য, আমি অন্তত খুঁজে পাই না। তাই ইমোশনাল হয়ে পরা, কান্নাকাটি করা, আমার চোখে খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।
আশাবাদ এবং নৈরাশ্যবাদ উভয়ই একই মুদ্রার দুটি দিক। ধনাত্বক এবং ঋণাত্মক চার্জ একে অপরের ভারসাম্য বজায় রাখে। একইভাবে আশাবাদ ও নৈরাশ্যবাদ আমাদের জীবনে পাশাপাশি চলে, একেবারে হাত ধরে। ঠিক যেমন একটি পরমাণুতে যেখানে ধনাত্মক প্রোটনগুলি নিউক্লিয়াসে থাকে, ঋণাত্মক চার্জযুক্ত ইলেকট্রন গুলি তার চারপাশে ঘুরতে থাকে এবং নিরপেক্ষ নিউট্রনগুলিও পরমাণুর ভরে অবদান রাখে। একইভাবে মনকে প্রোটনের মতো ইতিবাচক রাখতে হবে, মস্তিষ্ক নেতিবাচক দিকগুলো ভেবে দেখবে, অবশ্যই দেখতে হবে এবং সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য আবার আমাদের চিন্তাগুলিকে নিরপেক্ষ নিউট্রন কনার মত নিরপেক্ষ ভাবে গাঁথতে হবে। যদি আশাবাদী চিন্তাই বিমান আবিষ্কারের কারণ হয় তবে হতাশাবাদী চিন্তাই প্যারাসুট আবিষ্কারের জন্য দায়ী।
চার্জের পার্থক্য ছাড়া কখনও কোনো বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় না। তাই আমাদের আশেপাশের সমস্ত নেতিবাচক ব্যক্তিদের ধন্যবাদ । যাঁরা আমাদের সমালোচনা করেন, আমাদেরকে উত্তপ্ত করেন, অর্থাৎ আমাদের মধ্যে চার্জের পার্থক্য তৈরি করেন, আর নিজেদের অজান্তেই আমাদের মধ্যে স্ফুলিঙ্গকে বাঁচিয়ে রাখেন। কারেন্ট প্রবাহিত হতে বাধ্য হয়। তাই এই সব নেতিবাচক মানুষগুলি আমাদের জীবনে না থাকলে, জীবনটা এত চ্যালেঞ্জিং হতো না। তাই না? আর তাদের ভুল প্রমাণ করতে আমরা নিজেদের বার বার চ্যালেঞ্জও করতাম না। ভেঙে চুরে আবার নতুন করে গড়তাম না। একটি সুস্থ জীবন্ত উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য সূর্য এবং বৃষ্টি উভয়ই সমান প্রয়োজন।
অন্ধকার আছে বলেই আলোর গুরুত্ব আমরা বুঝি। “অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেই তো তোমার আলো। সকল দ্বন্দ্ব-বিরোধ-মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেই তো তোমার ভালো…”
কলকাতা, ভারত
১ Comment
very good job; Congratulations.